পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

卸 লোকসাহিত্য وفي ج প্রথমত, টিয়েপাখি নৌকা চড়িয়া আসিতেছে এমন দৃপ্ত কোনো বালক তাহার পিতার বয়সেও দেখে নাই ; বালকের পিতার সম্বন্ধেও সে কথা খাটে । কিন্তু সেই অপূর্বতাই তাহার প্রধান কৌতুক। বিশেষত, হঠাৎ যখন অগাধ জলের মধ্য হইতে একটা স্ফীতকায় বোয়াল মাছ উঠিয়া, বলা নাই কহ। নাই, থমকা তাহার নৌকাখানা লইয়া চলিল, এবং ক্রুদ্ধ ও ব্যতিব্যস্ত টিয়া মাথার রোয় ফুলাইয়া, পাখী ঝাপটাইয়া, অত্যুচ্চ চীৎকারে আপত্তি প্রকাশ করিতে থাকিল, তখন কৌতুক আরো বাড়িয়া উঠে। টিয়া বেচারার দুৰ্গতি এবং জলচর প্রাণীটার নিতান্ত অভদ্র ব্যবহার দেখিয়া অকস্মাৎ ভেঁাদড়ের দুনিবার নৃত্য-পৃহাও বড়ো চমৎকার । এবং সেই আনন্দনৰ্তনপর নিষ্ঠুর ভোঁদড়টিকে নিজের নৃত্যবেগ সম্বরণপূর্বক খোকার নৃত্য দেখিবার জন্য ফিরিয়া চাহিতে অনুরোধ করার মধ্যেও বিস্তর রস আছে। যেমন মিষ্ট ছন্দ শুনিলেই তাহাকে গানে বাধিয়া গাহিতে ইচ্ছা করে তেমনি এই-সকল ভাষার চিত্র দেখিলেই ইহাদিগকে রেখার চিত্রে অনুবাদ করিয়া ভাকিয়া ফেলিতে ইচ্ছা করে । কিন্তু হায়, এ-সকল চিত্রের রস নষ্ট না করিয়া ইহাদের বাল্য সরলতা, উজ্জল নবীনতা, অসংশয়তা, অসম্ভবের সহজ সম্ভবত রক্ষা করিয়া আঁকিতে পারে এমন চিত্রকর আমাদের দেশে কোথায় এবং বোধ করি সর্বত্রই দুর্লভ । থোক যাবে মাছ ধরতে ক্ষৗরনদীর কুলে। ছিপ নিয়ে গেল কোলা ব্যাঙে, মাছ নিয়ে গেল চিলে । থোকা ব'লে পাখিটি কোন বিলে চরে । থোকা ব’লে ডাক দিলে উড়ে এসে পড়ে ॥ ক্ষীরনদীর কূলে মাছ ধরিতে গিয়া খোকা যে কী সংকটেই পড়িয়াছিল তাহা কি তুলি দিয়া না আঁকিলে মনের ক্ষোভ মেটে ? অবশু, ক্ষীরনীর ভূগোলবৃত্তাস্ত থোকাবাবু আমাদের অপেক্ষ অনেক ভালো জানেন সন্দেহ নাই ; কিন্তু যে নদীতেই হউক, তিনি ষে প্রাজ্ঞোচিত ধৈর্ষাবলম্বন করিয়া পরম