পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেভুলানো ছড়া 있 গম্ভীরভাবে নিজ আয়তনের চতুর্গুণ দীর্ঘ এক ছিপ ফেলিয়া মাছ ধরিতে বসিয়াছেন তাহাই যথেষ্ট কৌতুকাবহ, তাহার উপর যখন জল হইতে ড্যাব চক্ষু মেলিয়া একটা অত্যন্ত উৎকট গোছের কোলা ব্যাঙ থোকার ছিপ লইয়া টান মারিয়াছে এবং অন্য দিকে ডাঙা হইতে চিল আসিয়া মাছ ছে৷ মারিয়া লইয়া চলিয়াছে, তখন র্তাহার বিব্রত বিম্মিত ব্যাকুল মুখের ভাব— একবার বা প্রাণপণ শক্তিতে পশ্চাতে ঝু”কিয়া পড়িয়া ছিপ লইয়া টানাটানি, একবার বা সেই উডউীন চোরের উদ্দেশে দুই উৎসুক ব্যগ্র হস্ত উধেবর্ণ উৎক্ষেপ—এ-সমস্ত চিত্র সুনিপুণ সহৃদয় চিত্রকরের প্রত্যাশায় বহুকাল হইতে প্রতীক্ষা করিতেছে । ć আবার থোকার পক্ষীমূর্তিও চিত্রের বিষয় বটে। মস্ত একটা বিল চোখে পড়িতেছে । তাহার ও পারটা ভালো দেখা যায় না। এ পারে তীরের কাছে একটা কোণের মতো জায়গায় বড়ো বড়ো ঘাস, বেতের ঝাড় এবং ঘন কচুর সমাবেশ ; জলে শৈবাল এবং নালফুলের বন, তাহারই মধ্যে লম্বচঞ্চু দীর্ঘপদ গম্ভীরপ্রকৃতি ধ্যামপরায়ণ গোটাকতক বক-সারসের সহিত মিশিয়। খোকাবাবু ডানা গুটাইয়। নতশিরে অত্যন্ত নিবিষ্টভাবে চরিয়া বেড়াইতেছেন, এ দৃশুটিও বেশ— এবং বিলের অনতিদূরে ভাদ্রমাসের জলমগ্ন পক্কশীর্ষ ধান্তক্ষেত্রের সংলগ্ন একটি কুটির ; সেই কুটির-প্রাঙ্গণে বাশের বেড়ার উপরে বাম হস্ত রাখিয়া দক্ষিণ হস্ত বিলের অভিমুখে সম্পূর্ণ প্রসারিত করিয়া দিয়া অপরাহের অবসান-স্বর্যালোকে জননী তাহার খোকাবাবুকে ডাকিতেছেন ; বেড়ার নিকটে ঘরে-ফেরা বাধা গরুটিও স্তিমিত কৌতুহলে সেই দিকে চাহিয়া দেখিতেছে এবং ভোজনতৃপ্ত খোকাবাবু নালবন শৈবালবনের মাঝখানে হঠাৎ মায়ের ভাক শুনিয়া সচকিতে কুটিরের দিকে চাহিয়া উড়ি-উড়ি করিতেছে, সেও স্বন্দর দৃপ্ত— এবং তাহার পর তৃতীয় দৃশ্বে পাখিটি মার বুকে গিয়া তাহার কাধে মুখ লুটাইয়াছে এবং দুই ডানায় তাহাকে অনেকটা ঝাপিয়া ফেলিয়াছে এবং