পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবি-সংগীত アー。 অথবা স্বল্প অপরাধের দগুচ্ছলে পুরুষের প্রেমাবেগকে কিয়ৎকালের জন্য প্রতিহত করিলে সে অভিমানের একটা মাধুর্য দেখা যায়। কিন্তু গুরুতর অপরাধ অথবা বিশ্বাসঘাতের দ্বারা নায়ক যখন সেই প্রেমের মূলেই কুঠারাঘাত করে তখন যথারীতি অভিমান প্রকাশ করিতে বসিলে নিজের প্রতি একান্ত অবমাননা প্রকাশ করা হয় মাত্র ; এইজন্য তাহাতে কোনো সৌন্দর্য নাই এবং তাহা কাব্যে স্থান পাইবার যোগ্য নহে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে স্বামীকৃত সকল প্রকার অসম্মাননা এবং অন্যায় স্ত্রীকে অগত্যা সহ এবং মার্জনা করিতেই হয় ; কিঞ্চিৎ অশ্রুজলসিক্ত বক্রবাক্যবাণ অথবা কিয়ৎকাল অবগুণ্ঠনাবৃত বিমুখ মৌনাবস্থা ছাড়া আর কোনো অস্ত্র নাই, অতএব আমাদের সমাজে স্ত্রীলোকের সর্বদা অভিমান জিনিসটা সত্য সন্দেহ নাই। কিন্তু তাহা সর্বত্র সুন্দর নহে ইহাও নিশ্চয় ; কারণ, যাহাতে কাহারো অবিমিশ্র স্থায়ী হীনতা প্রকাশ করে তাহা কখনোই সুন্দর হইতে পারে না । কবিদলের গানে রাধিকার যে অভিমান প্রকাশ হইয়াছে তাহ প্রায়শই এইরূপ অযোগ্য অভিমান।— সাধ ক’রে করেছিলেম দুর্জয় মান, শু্যামের তায় হল অপমান । শু্যামকে সাধলেম না, ফিরে চাইলেম না, কথা কইলেম না রেখে মান । কৃষ্ণ সেই রাগের অনুরাগে, রাগে রাগে গো পড়ে পাছে চন্দ্রাবলীর নবরাগে । ছিল পূর্বের যে পূর্বরাগ, আবার এ কী অপূর্ব রাগ, পাছে রাগে শু্যাম রাধার অাদর ভুলে যায়। যার মানের মানে অামায় মানে, সে না মানে