পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
১১১

 এইরূপে শাপবৃত্তান্ত কহিয়া রাজাকে কহিলেন বৎস! দুর্ব্বাসার শাপ প্রভাবেই তোমার স্মৃতিভ্রংশ হইয়াছিল, তাহাতেই তুমি উহাঁকে চিনিতে পার নাই। শকুন্তলার সখীর অনুনয় বিনয়ে কিঞ্চিৎ শান্ত হইয়া, দুর্ব্বসা অভিজ্ঞান দর্শনকে শাপমোচনের উপায় নির্দ্ধারিত করিয়া দিয়াছিলেন। সেই নিমিত্ত, অঙ্গরীয় দর্শন মাত্র শকুন্তলাবৃত্তান্ত পুনর্ব্বার তোমার স্মৃতিপথে আরূঢ় হয়।

 দুর্ব্বাসার শাপবৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া, সাতিশয় হর্ষিত হইয়া, রাজা কহিলেন ভগবন্! এক্ষণে আমি সকলের নিকট সকল অপরাধ হইতে মুক্ত হইলাম। শকুন্তলাও শুনিয়া মনে মনে-কহিতে লাগিলেন এই নিমিত্তই আমার এই দুর্দ্দশা ঘটিয়াছিল। নতুবা, আর্য্যপুত্র এমন সরলসদয় হইয়া, কেন আমাকে অকারণে পরিত্যাগ করিবেন। দুর্ব্বাসার শাপেই আমার সর্বনাশ ঘটিয়াছিল। এই নিমিত্তই, তপোবন হইতে প্রস্থান কালে, সখীরাও যত্ন পূর্ব্বক, আর্যপুত্রকে অঙ্গুরীয় দেখাইতে কহিয়াছিলেন। আজি ভাগ্যে এই কথা শুনিলাম; নতুবা যাবজ্জীবন আমার অন্তঃকরণে, আর্যপুত্র অকারণে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন বলিয়া, ক্ষোভ থাকিত।

 পরে, কশ্যপ রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন বৎস!