পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা

সেচন করিতে আরম্ভ করিলেন। অনসূয়া পরিহাস করিয়া শকুন্তলাকে কহিলেন সখি শকুন্তলে! বোধ করি, তাত কণ্ব তোমা অপেক্ষাও আশ্রমপাদপদিগকে ভাল বাসেন। যেহেতু, তুমি নরমালিকাকুসুমকোমলা; তথাপি তোমাকে আলবালজলসেচনে নিযুক্ত করিয়াছেন। শকুন্তলা, ঈষৎ হাস্য করিয়া, কহিলেন সখি অনসূয়ে! কেবল পিতা আদেশ করিয়াছেন বলিয়াই জলসেচন করিতে আসিয়াছি এমত নহে; আমারও ইহাদিগের উপর সহোদরস্নেহ আছে। প্রিয়ংবদা কহিলেন সখি শকুন্তলে! যে সকল বৃক্ষ গ্রীষ্মকালে কুসুম প্রসব করে তাহাদিগের সেচন সমাপন হইল; এক্ষণে,যাহাদের কুসুমের সময় অতিক্রান্ত হইয়াছে, আইস, তাহাদিগকেও সেচন করি। লাভের অভিসন্ধি না রাখিয়া যে কর্ম্ম করা যায় তাহাতে অধিকতর ধর্ম্ম লাভ হয়।

 রাজা,দেখিয়া শুনিয়া প্রীত ও চমৎকৃত হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন এই সেই কণ্বতনয়া শকুন্তলা! হায়! মহর্ষি অতি অবিবেচক, এমন শরীরে বল্কল পরাইয়াছেন। কিন্তু, যেমন প্রফুল্ল কমল শৈবল যোগে অধিক শোভা পায়, যেমন পূর্ণ শশধর কলঙ্ক সম্পর্কে সাতিশয় শোভমান হয়; সেইরূপ, এই, কৃশাঙ্গী বল পরিধান