পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
শকুন্তলা

লাবণ্য হওয়া অসম্ভব। ভূতল হইতে জ্যোতির্ম্ময় বিদ্যুতের উৎপত্তি হয় না। শকুন্তলা লজ্জায় নম্রমুখী হইয়া রহিলেন। প্রিয়ংবদা, হাস্যমুখে শকুন্তলার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া, রাজাকে সম্বোধিয়া কহিলেন মহাশয়ের আকার ইঙ্গিত দর্শনে বোধ হইতেছে যেন আর কিছু জিজ্ঞাসা করিবেন। শকুন্তলা, রাজার অগোচরে, প্রিয়ংবদাকে ভঙ্গি ও অঙ্গুলি দ্বারা তর্জ্জন করিতে লাগিলেন। রাজা কহিলেন তুমি বিলক্ষণ অনুভব করিয়াছ; তোমাদের সখীর বিষয়ে আমার আরো কিছু জিজ্ঞাস্য আছে। প্রিয়ংবদা কহিলেন এত বিচার করিতেছেন কেন অসঙ্কুচিত চিত্তে জিজ্ঞাসা করুন। রাজা কহিলেন আমার জিজ্ঞাস্য এই, তোমাদের সখী, যাবৎ বিবাহ না হইতেছে তাবৎ পর্য্যন্তমাত্র, তাপসব্রতসেবা করিবেন, অথবা যাবজ্জীবন হরিণীদিগের সহবাসে কালযাপন করিবেন। প্রিয়ংবদা কহিলেন তাত কণ্ব সঙ্কল্প করিয়া রাখিয়াছেন অনুরূপ পাত্র না পাইলে শকুন্তলার বিবাহ দিবেন না। শুনিয়া,সাতিশয় হর্ষিত হইয়া,মনে মনে কহিতে লাগিলেন আমার শকুন্তলালাভ নিতান্ত অসম্ভব নহে। হৃদয়! আশ্বাসিত হও, এক্ষণে সন্দেহ নির্ণয় হইয়াছে; যাহাকে অগ্নি আশঙ্কা করিতেছিলে তাহা স্পর্শশীতল রত্ন হইল।