পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
শকুন্তলা

লাগিলেন। অঙ্গুরীয়ে যে দুষ্মন্ত নাম মুদ্রিত ছিল প্রদান কালে রাজার তাহা স্মরণ ছিল না। এক্ষণে আত্মপ্রকাশ সম্ভাবনা দেখিয়া সাবধান হইয়া,কহিলেন যে মুদ্রিত নাম দেখিয়া তোমরা অন্যথা ভাবিও না। আমি রাজপুরুষ,রাজা আমাকে, প্রসাদচিহু স্বরূপ, এই স্বনামাঙ্কিত অঙ্গুরীয় প্রদান করিয়াছেন। প্রিয়ংবদা রাজার ছল বুঝিতে পারিলেন এবং কহিলেন মহাশয়! তবে এই অঙ্গুরীয় অঙ্গুলিবিযুক্ত করা কর্ত্তব্য নহে; আপনকার কথাতেই ইনি ঋণমুক্তা হইলেন। পরে ঈষৎ হাসিয়া শকুন্তলার দিকে চাহিয়া কহিলেন সখি শকুন্তলে! এই মহাশয়, অথবা মহারাজ, তোমাকে মুক্ত করিলেন এক্ষণে ইচ্ছা হয় যাও। শকুন্তলা মনে মনে কহিতে লাগিলেন এ ব্যক্তিকে পরিত্যাগ করিয়া যাওয়া আর আমার সাধ্য নহে। অনন্তর প্রিয়ংবদাকে কহিলেন আমি যাই না যাই তোমার কি।

 রাজা, শকুন্তলার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন আমি ইহার প্রতি যেরূপ এ আমার প্রতি সেরূপ কি না, বুঝিতে পারিতেছি না। অথরা, আর সন্দেহের বিষয় কি; যেহেতু, আমার সহিত কথা কহিতেছে না বটে, কিন্তু আমি কথা কহিতে আরম্ভ করিলে, অনন্যচিত্তা হইয়া স্থিরকর্ণে শ্রবণ করে; আর নয়নে নয়নে