পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
১৯

সঙ্গতি হইলে, তৎক্ষণাৎ মুখ ফিরাইয়া লয় বটে, অন্য দিকেও অধিক ক্ষণ চাহিয়া থাকে না। অন্তঃকরণে অনুরাগ সঞ্চার না হইলে এরূপ ভাব হয় না।

 রাজার ও তাপসকন্যাদিগের এইরূপ আলাপ হইতেছে, এমত সময়ে সহসা অনতিদূরে কোলাহল হইতে লাগিল এবং কেহ কহিতে লাগিল হে তপস্বিগণ! মৃগয়াবিহারী রাজা দুষ্মন্ত, সৈন্য সামন্ত সমভিব্যাহারে করিয়া, তপোবনসমীপে উপস্থিত হইয়াছেন; তোমরা তপোবনস্থ প্রাণিসমূহের রক্ষার্থে সত্বর ও যত্নবান্ হও। বিশেষতঃ, এক আরণ্য গজ, রাজার রথ দর্শনে শঙ্কিত হইয়া,তপস্যার মূর্ত্তিমান্ বিঘ্ন স্বরূপ, ধর্ম্মারণ্যে প্রবেশ করিতেছে।

 তাপসকন্যারা শুনিয়া সাতিশয় ব্যাকুল হইলেন। রাজা শুনিয়া বিরক্ত হইয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন কি আপদ! আমার অনুযায়ী লোকেরা, আমার অন্বেষণে আসিয়া, তপোবনের পীড়া জন্মাইতেছে। যাহা হউক, এক্ষণে ত্বরায় গিয়া নিবারণ করিতে হইল। অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা কহিলেন মহাশয়! আরণ্য গজের কথা শুনিয়া আমরা যৎপরোনাস্তি ব্যাকুল হইয়াছি; অনুমতি করুন কুটীরে যাই। রাজা ব্যস্তসমস্ত হইয়া কহিলেন তোমরা কুটীরে যাও; আমিও তপোবনপীড়াপরিহারের চেষ্টা