পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৪৩

নির্দয়! তোমার মন আমি জানি না; কিন্তু আমি তোমাতে একান্ত অনুরাগিণী হইয়া নিরন্তর সন্তাপিত হইতেছি”। রাজা শুনিয়া, আর অন্তরালে থাকিতে না পারিয়া, সহসা সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা, দেখিয়া সাতিশয় হর্ষিত হইয়া, গাত্রোত্থান পূর্ব্বক, পরম সমাদরে স্বাগত জিজ্ঞাসা করিয়া বসিবার সংবর্ধনা করিলেন। শকুন্তলাও,সাতিশয় ব্যস্ত সমস্ত হইয়া, গাত্রোত্থান করিতে উদ্যত হইলেন।

 তখন রাজা নিবারণ করিয়া কহিলেন সুন্দরি! এত ব্যস্ত হইতে হইবে না। দেখ, তোমার শরীরের যেরূপ গ্লানি, তাহাতে কোন মতেই শয্যা পরিত্যাগ করা কর্ত্তব্য নহে। সখীরা রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন মহারাজ! এই শিলাতলে উপবেশন করুন। রাজা উপবিষ্ট হইলেন। শকুন্তলা, লজ্জায় অত্যন্ত জড়ীভূতা হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন হে হৃদয়! তত উতলা হইয়া এখন এত কাতর হইতেছ কেন। রাজা অনসূয়া ও প্রিয়ংবদাকে কহিলেন বোধ হইতেছে তোমাদের সখী অতিশয় অসুস্থ হইয়াছেন। উভয়ে ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন এখন সুস্থ হইবেন। শকুন্তলা শুনিয়া লজ্জায় নম্রমুখী হইয়া রহিলেন।