পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৫৯

তপোবন পরিত্যাগ করিয়া যাইতে আমার পা উঠিতেছে না। প্রিয়ংবদা কহিলেন সখি! তুমিই ষে কেবল তপোবন বিরহেকাতরা হইতেছ এৰূপ নহে; তোমার বিরহে তপোবনের কি অবস্থা হইতেছে দেখ। দেঁখ! সচেতন জীব মাত্রেই নিরানন্দ ও শোকাকুল হইয়াছে—হরিণ গণ আহার বিহারে পরাঙ্মুখ হইয়া স্থির হইয়া রহিয়াছে, মুখের গ্রাস মুখ হইতে পড়িয়া যাইতেছে; ময়ুর মধুরী নৃত্য পরিত্যাগ করিয়। উৰ্দ্ধমুখ হইয়া রহিয়াছে; কোকিলগণ আম্রমুকুলের রসাস্বাদে বিমুখ হইয়া নীরব হইয়া আছে; মধুকর মধুকরী মধুপানে বিরত হইয়াছে ও গুন গুন ধ্বনি পরিত্যাগ করিয়াছে।

 কণ্ব কহিলেন বৎসে! আর কেন বিলম্ব কর,বেলা হয়। তখন শকুন্তলা কহিলেন তাত! বনতোষিণীকে সম্ভাষণ না করিয়। যাইব না। এই বলিয়া বনতোষিণীর নিকটে গিয়া কহিলেন বনতোল্লিণি! শাখাবাহুদ্বারা আমাকে স্নেহভরে আলিঙ্গন কর; আজি অবধি আমি দুরবর্ত্তিনী হইলাম। অনন্তর অনুসূয়া ও প্রিয়ংবদাকে কহিলেন সখি! আমি বনতোষিণীকে তোমাদের হস্তে সমর্পণ করিলাম। তাঁঁহারা কহিলেন,সখি! আমাদিগকে কাহার হস্তে সমর্পণ করিলে বল। এই বলিয়া শোকাকুল হইয়া রোদন