পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
শকুন্তলা।

মহর্ষি কণ্বের পালিত তনয়া। মৃগয়াপ্রসঙ্গে তদীয় তপোবনে উপস্থিত হইয়া, আমি গান্ধর্ব্ববিধানে ইহার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলাম। পরে ইনি যৎকালে রাজধানীতে নীত হন, তখন আমার এরূপ স্মৃতিভ্রংশ ঘটিয়াছিল যে ইঁহাকে চিনিতে পারিলাম না। চিনিতে না পারিয়া, প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলাম। ইহাতে আমি মহাশয়ের ও মহর্ষি কণ্বের নিকট অত্যন্ত অপরাধী হইয়াছি। কৃপা করিয়া আমার অপরাধ মার্জ্জনা করুন; আর যাহাতে ভগবান্ কণ্ব আমার উপর অক্রোধ হন, আপনাকে তাহারও উপায় করিতে হইবেক।

 কশ্যপ শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, বৎস! সে জন্য তুমি কুণ্ঠিত হইও না। এ বিষয়ে তোমার অণুমাত্র অপরাধ নাই। যে কারণে তোমার স্মৃতিভ্রংশ ঘটিয়াছিল, তুমি ও শকুন্তলা উভয়েই অবগত নই। এই নিমিত্ত আমি তোমাদিগকে সেই স্মৃতিভ্রংশের প্রকৃত হেতু কহিতেছি। শুনিলে শকুন্তলার হৃদয় হইতে প্রত্যাখ্যাননিবন্ধন সকল ক্ষোভ দুর হইবেক। এই বলিয়া, শকুন্তলাকে কহিলেন, বৎসে! রাজা তপোবন হইতে প্রতিগমন করিলে পর, এক দিন তুমি পতিচিন্তায় মগ্ন হইয়া কুটীরে উপবিষ্ট ছিলে। সেই সময়ে দুর্ব্বাসা আসিয়া অতিথি হন। তুমি এক কালে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়া ছিলে, সুতরাং তাঁহার সৎকার বা সংবর্দ্ধনা করা হয় নাই। তিনি তাহাতে