পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ।
১০৭

কুপিত হইয়া, তোমায় এই শাপ দিয়া, চলিয়া যান, তুই যার চিন্তায় মগ্ন হইয়া অতিথির অবমাননা করিলি, সে কখনও তোরে স্মরণ করিবে না। তুমি সেই শাপ শুনিতে পাও নাই। তোমার সখীরা শুনিতে পাইয়া তাঁহার চরণে ধরিয়া অনেক অনুনয় করিলেন। তখন তিনি কহিলেন, এ শাপ অন্যথা হইবার নহে। তবে যদি কোনও অভিজ্ঞান দর্শাইতে পারে, তাহা হইলে স্মরণ করিবেক। অনন্তর, রাজাকে কহিলেন, বৎস! দুর্ব্বাসার শাপপ্রভাবেই তোমার স্মৃতিভ্রংশ ঘটিয়াছিল, তাহাতেই তুমি ইঁহাকে চিনিতে পার নাই। শকুন্তলার সখীর অনুনয়বাক্যে কিঞ্চিৎ শাস্তু হইয়া, দুর্ব্বাসা অভিজ্ঞানদর্শনকে শাপমোচনের উপায় নির্দ্ধারিত করিয়া দিয়াছিলেন; সেই নিমিত্ত, অঙ্গুরীয়দর্শনমাত্র, শকুন্তলবৃত্তান্ত পুনর্বার তোমার স্মৃতিপথে আরূঢ় হয়।

 দুর্ব্বাসার শাপবৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া, সাতিশয় হর্ষিত হইয়া, রাজা কহিলেন, ভগবান্! এক্ষণে আমি সকলের নিকট সকল অপরাধ হইতে মুক্ত হইলাম। শকুন্তলাও শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, এই নিমিত্তই আমার এই দুর্দশা ঘটিয়াছিল; নতুবা আর্য্যপুত্র, এমন সরলহৃদয় হইয়া, কেন আমায় অকারণে পরিত্যাগ করিবেন? দুর্ব্বাসার শাপই আমার সর্ব্বনাশের মূল। এই জন্যেই, তপোবন হইতে প্রস্থানকালে, সখীরাও যত্নপূর্ব্বক আর্য্যপুত্রকে অঙ্গুরীয় দেখাইতে কহিয়াছিলেন। আজি ভাগ্যে