পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
শকুন্তলা।

বলিয়া পরিচয় দিতে ইচ্ছা হইতেছে না। কি করি। অথবা, অতিথিভাবে উপস্থিত হইয়া অভয় প্রদান করি। এই স্থির করিয়া, রাজা, সত্বর গমনে তাঁহাদের সম্মুখবর্ত্তী হইয়া, কহিতে লাগিলেন, পুরুবংশোদ্ভব দুষ্মন্ত দুর্বৃত্তদিগের শাসনকর্ত্তা বিদ্যমান থাকিতে কার সাধ্য, মুগ্ধস্বভাবা তপস্বিকন্যাদিগের সহিত অশিষ্ট ব্যবহার করে।

 তপস্বিকন্যারা, এক অপরিচিত ব্যক্তিকে সহসা সম্মুখে উপস্থিত দেখিয়া, প্রথমতঃ অতিশয় সঙ্কুচিত হইলেন। কিঞ্চিৎ পরে, অনসূয়া কহিলেন, না মহাশয়! এমন কিছু অনিষ্টঘটনা হয় নাই। তবে কি জানেন, এক দুষ্ট মধুকর আমাদের প্রিয়সখী শকুন্তলাকে অতিশয় আকুল করিয়াছিল; তাহাতেই ইনি কিছু কাতর হইয়াছিলেন। রাজা, ঈষৎ হাস্য করিয়া শকুন্তলাকে জিজ্ঞাসিলেন, কেমন, তপস্যার বৃদ্ধি হইতেছে? শকুন্তলা লজ্জায় জড়ীভূতা ও নম্রমুখী হইয়া রহিলেন, কিছুই উত্তর করিতে পারিলেন না। অনসূয়া শকুন্তলাকে উত্তরদানে পরাঙ্মুখী দেখিয়া, রাজাকে কহিলেন, হাঁ মহাশয়! তপস্যার বৃদ্ধি হইতেছে; এক্ষণে অতিথিবিশেষের সমাগমলাভ দ্বারা সবিশেষ বৃদ্ধি হইল। প্রিয়ংবদা শকুন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, সখি! যাও যাও, শীঘ্র কুটীর হইতে অর্ঘ্যপত্র লইয়া আইস; জল আনিবার প্রয়োজন নাই;