পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৯

করিয়া কহিলেন, প্রিয়সখি! যদি আজি পিতা আশ্রমে থাকিতেন, জীবনসর্ব্বস্ব দিয়াও এই অতিথিকে তুষ্ট করিতেন। শকুন্তলা শুনিয়া কৃত্রিম কোপ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন, তোমরা কিছু মনে করিয়া এই কথা বলিতেছ; আমি তোমাদের কথা শুনিব না।

 রাজা শকুন্তলার বৃত্তান্ত সবিশেষ অবগত হইবার নিমিত্ত একান্ত কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, আমি তোমাদের সখীর বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করিতে বাঞ্ছা করি। তাঁহারা কহিলেন, মহাশয়! আপনকার এ অভ্যর্থনা অনুগ্রহবিশেষ; যাহা ইচ্ছা হয়, সচ্ছন্দে জিজ্ঞাসা করুন। রাজা কহিলেন, মহর্ষি কণ্ব কৌমারব্রহ্মচারী, ধর্ম্মচিন্তায় ও ব্রহ্মোপাসনায় একান্ত রত; জন্মাবচ্ছিন্নে দারপরিগ্রহ করেন নাই; অথচ তোমাদের সখী তাঁহার তনয়া, ইহা কি রূপে সম্ভবে, বুঝিতে পারিতেছি না।

 রাজার এই জিজ্ঞাসা শুনিয়া অনসূয়া কহিলেন, মহাশয়! আমরা প্রিয়সখীর জন্মবৃত্তান্ত যেরূপ শুনিয়াছি, কহিতেছি শ্রবণ করুন। শুনিয়া থাকিবেন, বিশ্বামিত্র নামে এক অতি প্রভাবশালী রাজর্ষি আছেন। তিনি একদা গোমতীতীরে অতি কঠোর তপস্যা আরম্ভ করেন। দেবতারা, সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া, রাজর্ষির সমাধিভঙ্গ করিবার নিমিত্ত, মেনকানাম্নী