পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
শকুন্তলা।

অপ্সরাকে পাঠাইয়া দেন। মেনকা তদীয় আশ্রমে উপস্থিত হইয়া মায়াজাল বিস্তার করিলে, মহর্ষির সমাধি ভঙ্গ হইল। বিশ্বামিত্র ও মেনকা আমাদের সখীর জনক জননী। নির্দয়া মেনকা, সদ্যঃপ্রসূতা তনয়াকে অরণ্যে পরিত্যাগ করিয়া, স্বস্থানে। প্রস্থান করিল। আমাদের সখী সেই বিজন বনে অনাথা পড়িয়া রহিলেন। এক পক্ষী, কোন অনির্বচনীয় কারণে স্নেহবশ হইয়া, পক্ষপুট দ্বারা আচ্ছাদন করিয়া রক্ষণাবেক্ষণ করিতে লাগিল। দৈবযোগে, তাত কণ্ব পর্য্যটনক্রমে সেই সময়ে সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন। সদ্যঃপ্রসূতা কন্যাকে তদবস্থ পতিতা দেখিয়া, তাঁহার অন্তঃকরণে কারুণ্যরসের আবির্ভাব হইল। তিনি, তৎক্ষণাৎ আশ্রমে অনয়ন করিয়া, স্বীয় তনয়ার ন্যায় লালন পালান করিতে আরম্ভ করিলেন, এবং প্রথমে শকুন্ত অর্থাৎ পক্ষী লালন করিয়াছিল, এই নিমিত্ত নাম শকুন্তলা রাখিলেন।

 রাজা শকুন্তলার জন্মবৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া কহিলেন, হাঁ সম্ভব বটে; নতুবা মানবীতে কি এরূপ অলৌকিক রূপ লাবণ্য সম্ভবিতে পারে? ভূতল হইতে কখনও জ্যোতির্ময় বিদ্যুতের উৎপত্তি হয় না। শকুন্তলা লজ্জায় নম্রমুখী হইয়া রহিলেন। প্রিয়ংবদা হাস্যমুখে, শকুন্তলার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া, রাজাকে সম্বোধিয়া কহিলেন, মহাশয়ের আকার ইঙ্গিত দর্শনে বোধ হইতেছে, যেন আর কিছু জিজ্ঞাসা করিবেন। শকুন্তলা, রাজার