পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
শকুন্তলা।

বিশেষতঃ, আজি তোমার উপর অতিথিপরিচর্য্যার ভার আছে। অতএব, ইঁহাকে পরিত্যাগ করিয়া তোমার চলিয়া যাওয়া উচিত নহে। শকুন্তলা কিছু না বলিয়া চলিয়া যাইতে লাগিলেন। তখন প্রিয়ংবদা শকুন্তলাকে আটকাইয়া কহিলেন, সখি! তুমি যাইতে পাইবে না। আমার এক কলসী জল ধার; আগে শোধ দাও, তবে যাইতে দিব। এই বলিয়া শকুন্তলাকে বলপূর্ব্বক নিবারণ করিলেন। শকুন্তলা, কিঞ্চিৎ কুপিত হইয়া ঋণপরিশোধের নিমিত্ত, কলস লইয়া জল আনিতে উদ্যত হইলেন। তখন রাজা প্রিয়ংবদাকে সম্ভাষণ করিয়া কহিলেন, তপসকন্যে! তোমার সখী বৃক্ষসেচন দ্বারা অতিশয় ক্লান্ত হইয়াছেন, আর উঁহাকে পল্বল হইতে জল আনাইয়া অধিক ক্লান্ত করা উচিত হয় না। আমি তোমার সখীকে ঋণমুক্ত করিতেছি। এই বলিয়া, রাজা অঙ্গুলি হইতে অঙ্গুরীয় উন্মোচন করিয়া, জল কলসের মূল্যস্বরূপ, প্রিয়ংবদার হস্তে অর্পণ করিলেন।

 অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা অঙ্গুরীয়মুদ্রিত নামাক্ষর পাঠে বিস্ময়পন্ন হইয়া, পরস্পর মুখ নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। অঙ্গুরীয়ে যে দুষ্মন্তনাম মুদ্রিত ছিল, প্রদানকালে রাজার তাহা স্মরণ ছিল না। এক্ষণে, তিনি আত্মপ্রকাশসম্ভাবনাদর্শনে সাবধান হইয়া কহিলেন, মুদ্রিত নাম দেখিয়া তোমরা অন্যথা ভাবিও। আমি রাজপুরুষ, রাজা আমারে প্রসাদচিহ্নস্বরূপ, এই