পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
২৩

স্বনামাঙ্কিত অঙ্গুরীয় প্রদান করিয়াছেন। প্রিয়ংবদা রাজার ছল বুঝিতে পারিয়া কহিলেন, মহাশয়! তবে এই অঙ্গুরীয় অঙ্গুলীবিযুক্ত করা কর্তব্য নহে, আপনকার কথাতেই ইনি ঋণে মুক্ত হইলেন; পরে, ঈষৎ হাসিয়া শকুন্তলার দিকে চাহিয়া কহিলেন, সখি শকুন্তলে! এই মহাশয়, অথবা মহারাজ, তোমায় ঋণে মুক্ত করিলেন। এক্ষণে ইচ্ছা হয় যাও। শকুন্তলা মনে মনে কহিতে লাগিলেন, এ ব্যক্তিকে পরিত্যাগ করিয়া যাওয়া আর আমার সাধ্য নহে; অনন্তর, প্রিয়ংবদাকে কহিলেন, আমি যাই না যাই তোমার কি?

 রাজা, শকুন্তলার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, আমি ইহার প্রতি যেরূপ, এ আমার প্রতি সেরূপ কি না, বুঝিতে পারিতেছি না। অথবা, আর সন্দেহের বিষয় কি? কারণ, আমার সহিত কথা কহিতেছে না, অথচ আমি কথা কহিতে আরম্ভ করিলে অনন্ত চিত্ত হইয়া স্থির কর্ণে শ্রবণ করে; নয়নে নয়নে সঙ্গত হইলে, তৎক্ষণাৎ মুখ ফিরাইয়া লয়, অথচ অন্যদিকেও অধিক ক্ষণ চাহিয়া থাকে না। অন্তঃকরণে অনুরাগসঞ্চার না হইলে এরূপ ভাব হয় না।

 রাজা ও তাপসকন্যাদিগের এইরূপ আলাপ হইতেছে, এমন সময়ে সহসা অনতিদূরে অতি মহান্ কোলাহল উত্থিত হইল,