পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
শকুন্তলা।

মনে মনে এই বিবেচনা করিলেন, বিকলঙ্গের ন্যায় হইয়া থাকি, তাহা হইলেও যদি আজি বিশ্রাম করিতে পাই। এই বলিয়া, মাধব্য, ভগ্নকলেবরের ন্যায়, একান্ত বিকল হইয়া রহিলেন; পরে, রাজা সন্নিহিত হইবামাত্র, সাতিশয় কাতরতাপ্রদর্শনপূর্ব্বক কহিলেন, বয়স্য! আমার সর্ব্ব শরীর অবশ হইয়া আছে, হস্ত প্রসারণ করি, এমন ক্ষমতা নাই; অতএব কেবল বাক্য দ্বারাই আশীর্ব্বাদ করি।

 রাজা মাধব্যকে, তদবস্থ অবস্থিত দেখিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, বয়স্য! তোমার শরীর এরূপ বিকল হইল কেন? মাধব্য কহিলেন, কেন হইল কি আবার; স্বয়ং অস্থি ভাঙ্গিয়া দিয়া, অশ্রুপাতের কারণ জিজ্ঞাসা করিতেছ? রাজা কহিলেন, বয়স্য! বুঝিতে পারিলাম না, স্পষ্ট করিয়া বল। নদীতীরবর্ত্তী বেতস যে কুজভাব অবলম্বন করে, সে কি স্বেচ্ছাবশতঃ সেইরূপ করে; অথবা নদীবেগপ্রভাবে? রাজা কহিলেন, নদীবেগ তাহার কারণ। মাধব্য কহিলেন, তুমিও আমার অঙ্গবৈকল্যের। রাজা কহিলেন, সে কেমন? মাধব্য কহিলেন, আমি কি বলবি, ইহা কি উচিত হয় যে, রাজকার্য্য পরিত্যাগ করিয়া, বনচরের ব্যবসায় অবলম্বনপূর্ব্বক, নিয়ত বনে বনে ভ্রমণ করিবে। আমি ব্রাহ্মণের সন্তান; সর্ব্বদা তোমার সঙ্গে সঙ্গে মৃগের অন্বেষণে কাননে কাননে ভ্রমণ করিয়া, সন্ধিবন্ধ সকল