পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৯

শিথিল হইয়া গিয়াছে, এবং সর্ব্ব শরীর অবশ হইয়া রহিয়াছে। অতএব, বিনয়বাক্যে প্রার্থনা করিতেছি, অন্ততঃ এক দিনের মত আমায় বিশ্রাম করিতে দাও।

 রাজা, মাধব্যের প্রার্থনা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, এ ত এইরূপ কহিতেছে; আমারও শকুন্তলাদর্শন অবধি মৃগয়াবিষয়ে মন নিতান্ত নিরুৎসাহ হইয়াছে। শরাসনে শরসন্ধান করি, কিন্তু মৃগের উপর নিক্ষেপ করিতে পারি না; তাহাদের মুগ্ধ নয়ন অবলোকন করিলে, শকুন্তলার অলৌকিকবিভ্রমবিলাসশালী নয়নযুগল মনে পড়ে। মাধব্য রাজার মুখে দৃষ্টিপাত করিয়া ভাবিতে লাগিলেন, আমি অরণ্যে রোদন করিলাম। রাজা ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, না হে না, আমি অন্য কিছু ভাবিতেছি না। সুহৃদ্বাক্য লঙ্ঘন করা কর্তব্য নহে, এই বিবেচনায় আজি মৃগয়ায় ক্ষান্ত হইলাম। মাধব্য, শ্রবণমাত্র যার পর নাই আনন্দিত হইয়া, চিরজীবী হও বলিয়া, চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলেন। রাজা কহিলেন, বয়স্য! যাইও না, আমার কিছু কথা আছে। মাধব্য, কি কথা বল বলিয়া, শ্রবণোন্মুখ ইইরা, দণ্ডায়মান রহিলেন। রাজা কহিলেন, বয়স্য! কোনও অনায়াসসাধ্য কর্ম্মে আমার সহায়তা করিতে হইবেক। মাধব্য কহিলেন, বুঝিয়াছি, আর বলিতে হইবে না, মিষ্টান্নভক্ষণে; সে বিষয়ে আমি বিলক্ষণ নিপুণ বটি, অনায়াসেই সহায়তা