পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
৩১

বিষয় আর কি হইতে পারে? যাহারা মৃগয়াকে ব্যসনমধ্যে গণ্য করে, তাহারা নিতান্ত অর্বাচীন; বিবেচনা করুন, এরূপ আমোদ, এরূপ উপকার আর কিসে আছে? মাধব্য শুনিয়া, কৃত্রিম কোপ প্রদর্শন করিয়া, কহিলেন, আরে নরাধম! ক্ষান্ত ই, আর তোর প্রবৃত্তি জন্মাইতে হইবেক না; আজি উনি আপন প্রকৃতি প্রাপ্ত হইয়াছেন। আমি দিব্য চক্ষে দেখিতেছি, তুই বনে বনে ভ্রমণ করিয়া, এক দিন, নরনাসিকালোলুপ ভল্লুকের মুখে পড়িবি।

 উভয়ের এইরূপ বিবাদারম্ভ দেখিয়া, রাজা সেনাপতিকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, দেখ! আমরা আশ্রমসমীপে আছি, এজন্য তোমার মতে সম্মত হইতে পারিলাম না। অদ্য মহিষেরা, নিপানে অবগাহন করিয়া, নিরুদ্বেগে জলক্রীড়া করুক; হরিণগণ, তরুচ্ছায়ায় দলবদ্ধ হইয়া, রোমন্থ অভ্যাস করুক; বরাহেরা অশঙ্কিত চিত্তে পল্বলে মুস্তা ভক্ষণ করুক; আর আমার শরাসনও বিশ্রাম লাভ করুক। সেনাপতি কহিলেন, মহারাজের যেমন অভিরুচি। রাজা কহিলেন, তবে যে সমস্ত মৃগয়াসহচর পূর্ব্বে বনপ্রস্থান করিয়াছে, তাহাদিগকে ফিরাইয়া আন; আর সেনাসংক্রান্ত লোকদিগকে বিলক্ষণ, সতর্ক করিয়া দাও, যেন তাহারা কোনও ক্রমে তপোবনের উৎপীড়ন না জন্মায়।

 সেনাপতি যে আজ্ঞা মহারাজ বলিয়া নিষ্ক্রান্ত হইলে, রাজা