পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৪১

অবলোকন করি। এই বলিয়া, রাজা উৎসুক মনে শ্রবণ ও সভৃষ্ণ নয়নে অবলোকন করিতে লাগিলেন।

 শকুন্তলার শরীরতাপ সাতিশয় প্রবল হওয়াতে, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা শীতল সলিলার্দ্র নলিনীদল লইয়া কিয়ৎ ক্ষণ বায়ু সঞ্চালন করিলেন, এবং জিজ্ঞাসিলেন, সখি শকুন্তলে! কেমন, মলিনীদলবায়ু তোমার সুখজনক বোধ হইতেছে? শকুন্তলা কহিলেন, সখি! তোমরা কি বাতাস করিতেছ? উভয়ে শুনিয়া সাতিশয় বিষন্ন হুইয়া, পরস্পর মুখনিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। বাস্তবিক, তৎকালে শকুন্তলা, দুষ্মম্ভচিন্তায় নিতান্ত মগ্ন হইয়া, এক বারে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়াছিলেন। রাজা, শুনিয়া ও শকুন্তলার অবস্থা দেখিয়া, মনে মনে বিবেচনা করিতে লাগিলেন, ইহাকে অত্যন্তু অসুস্থশরীর দেখিতেছি। কিন্তু কি কারণে এ এরূপ অসুস্থ হইয়াছে? গ্রীষ্মের প্রাদুর্ভাববশতঃ ইহার ঈদৃশ অসুখ, কি যে কারণে আমার এই দশা ঘটিয়াছে, ইহারও তাহাই। অথবা, এ বিষয়ে আর সংশয় করিবার আবশ্যকতা নাই; গ্রীষ্মদোষে কামিনীগণের এরূপ অবস্থা কোনও মতেই সম্ভাবিত নহে।

 প্রিয়ংবদা শকুন্তলার অগোচরে অনসূয়াকে কহিলেন, সখি! সেই রাজর্ষির প্রথম দর্শন অবধিই শকুন্তলা কেমন একপ্রকার হইয়াছে; ঐ কারণে ত ইহার এ অবস্থা ঘটে নাই? অনসূয়া