পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৪৭

সম্পূর্ণ সংবর্দ্ধনা লাভ হইয়াছে। বিশেষতঃ, তোমার শরীরের যেরূপ গ্লানি, তাহাতে কোনও মতেই শয্যা পরিত্যাগ করা কর্ত্তব্য নহে। সখীরা রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, মহারাজ! এই শিলাতলে উপবেশন করুন। রাজা উপবিষ্ট হইলেন। শকুন্তলা, লজ্জায় অত্যন্ত জড়ীভূতা হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, হৃদয়! যার জন্যে তত উতলা হইয়াছিলে, এখন তাহাকে দেখিয়া এত কাতর হইতেছ কেন? রাজা অনসূয়া ও প্রিয়ংবদাকে কহিলেন, আজি আমি তোমাদের সখীকে অতিশয় অসুস্থ দেখিতেছি। উভয়ে ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, এখন সুস্থ হইবেন। শকুন্তলা লজ্জায় অবনতমুখী হইয়া রহিলেন।

 অনসূয়া কহিলেন, মহারাজ! শুনিতে পাই, রাজাদিগের অনেক মহিষী থাকে, কিন্ত‌ু সকলেই প্রেয়সী হয় না; অতএব আমরা, যেন সখীর নিমিত্ত অবশেষে মনোদুঃখ না পাই। রাজা কহিলেন, যথার্থ বটে রাজাদিগের অনেক মহিলা থাকে; কিন্তু আমি অকপট হৃদয়ে কহিতেছি, তোমাদের সখীই আমার জীবনসর্ব্বস্ব হইবেন। তখন অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা সাতিশয় হর্ষিত হইয়া কহিলেন, মহারাজ! এক্ষণে আমরা নিশ্চিন্ত ও চরিতার্থ হইলাম। শকুন্তলা কহিলেন, সখি! আমরা মহারাজকে। লক্ষ্য করিয়া কত কথা কহিয়াছি; ক্ষমা প্রার্থনা কর। সখীরা