পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
শকুন্তলা।

ভগবান্ কণ্ব কখনই কষ্ট বা অসন্তুষ্ট হইবেন না। শত শত রাজর্ষিকন্যারা গান্ধর্ব্ববিধানে আপনাদিগকে অনুরূপ পাত্রের হস্তগত করিয়াছেন, এবং তাঁহাদের গুরুজনেরাও, পরিশেষে সবিশেষ অবগত হইয়া, সম্পূর্ণ অনুমোদন করিয়াছেন। শকুন্তলা, মহারাজ! এই সম্ভাষণমাত্রপরিচিত ব্যক্তিকে ভুলিবেন না এই বলিয়া, রাজার হাত ছাড়াইয়া চলিয়া গেলেন। রাজা কহিলেন, সুন্দরি! তুমি আমার হাত ছাড়াইয়া সম্মুখ হইতে চলিয়া গেলে, কিন্ত‌ু আমার চিত্ত হইতে যাইতে পারিবে না। শকুন্তলা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, ইহা শুনিয়া, আর আমার পা উঠিতেছে না। যাহা হউক, কিয়ৎ ক্ষণ অন্তরালে থাকিয়া ইঁহার অনুরাগ পরীক্ষা করিব। এই বলিয়া, লতাবিতানে আবৃতশরীরা হইয়া, শকুন্তলা কিঞ্চিৎ অন্তরে অবস্থান করিলেন।

 রাজা, একাকী লতামণ্ডপে অবস্থিত হইয়া, শকুন্তলাকে উদ্দেশ করিয়া কহিতে লাগিলেন, প্রিয়ে! আমি তোমা বই আর জানি না; কিন্তু তুমি নিতান্ত নির্দয় হইয়া আমায় এক বারেই পরিত্যাগ করিয়া গেলে; তুমি বড় কঠিন। পরে, তিনি কিয়ৎ ক্ষণ মৌন ভাবে থাকিয়া কহিলেন, আর প্রিয়াশূন্য লতামণ্ডপে থাকিয়া কি ফল? এই বলিয়া তথা হইতে চলিয়া যান, এমন সময়ে শকুন্তলার মৃণালবলয় ভূতলে পতিত দেখিয়া