পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৪৯

তৎক্ষণাৎ তাহা উঠাইয়া লইলেন, এবং পরম সমাদরে বক্ষঃস্থলে স্থাপনপূর্ব্বক, কৃতার্থম্মন্য চিত্তে শকুন্তলাকে উদ্দেশ করিয়া, কহিতে লাগিলেন, প্রিয়ে! তোমার মৃণালবলয়, অচেতন হইয়াও, এই দুঃখিত ব্যক্তিকে আশ্বাসিত করিলেক; কিন্ত‌ু তুমি তাহা করিলে না। শকুন্তলা, আর ইহা শুনিয়া বিলম্ব করিতে পারি না, কিন্তু কি বলিয়াই যাই; অথবা, এই মৃণালবলয়ের ছলেই যাই; এই বলিয়া পুনর্বার লতামণ্ডপে প্রবেশ করিলেন। রাজা দর্শনমাত্র হর্ষসাগরে মগ্ন হইয়া কহিলেন, এই যে আমার জীবিতেশ্বরী আসিয়াছেন! বুঝিলাম, দেবতারা আমার পরিতাপ শুনিয়া সদয় হইলেন, তাহাতেই পুনরায় প্রিয়ারে দেখিতে পাইলাম। চাতক পিপাসায় শুষ্ককণ্ঠ হইয়া জলপ্রার্থনা করিল, অমনি নব জলধর হইতে শীতল জলধারা তাহার মুখে পতিত হইল।

 শকুন্তলা রাজার সম্মুখবর্ত্তনী হইয়া কহিলেন, মহারাজ! অর্দ্ধ পথে স্মরণ হওয়াতে, আমি এই মৃণালবলয় লইতে আসিয়াছি, আমার মৃণালবলয় দাও। রাজা কহিলেন, যদি তুমি, আমায় যথাস্থানে নিবেশিত করিতে দাও, তোমার মৃণালবলয় তোমায় ফিরিয়া দি, নতুবা দিব না। শকুন্তলা অগত্যা সম্মতা হলেন। রাজা কহিলেন, এস এই শিলাতলে বসিয়া পরাইয়া দি। উভয়ে শিলাতলে উপবিষ্ট হইলেন; রাজা শকুন্তলার