পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
শকুন্তলা।

ন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, বৎসে! এক্ষণে তোমারেও কিছু উপদেশ দিব। আমরা বনবাসী বটে, কিন্তু লৌকিক ব্যাপারে নিতান্ত অনভিজ্ঞ নহি। তুমি পতিগৃহে গিয়া গুরুজনদিগের শুশ্রুষা করিবে, সপত্নীদিগের সহিত প্রিয়সখীব্যবহার করিবে, পরিচারিণীদিগের প্রতি সম্পূর্ণ দয়া দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করিবে, সৌভাগ্যগর্ব্বে গর্ব্বিত হইবে না, স্বামী কার্কশ্যপ্রদর্শন করিলেও রোষবশা ও প্রতিকূলচারিণী হইবে না; মহিলারা এরূপ ব্যবহারিণী হইলেই গৃহিণীপদে প্রতিষ্ঠিত হয়; বিপরীতকারিণীরা কুলের কণ্টকস্বরূপ। ইহা কহিয়া, বলিলেন, দেখ গৌতমীই বা কি বলেন? গৌতমী কহিলেন, বধুদিগকে এই বই আর কি কহিয়া দিতে হইবেক? পরে শকুন্তলাকে কহিলেন, বাছা! উনি যেগুলি বলিলেন, সকল মনে রাখিও।

 এই রূপে উপদেশদান সমাপ্ত হইলে, কণ্ব শকুন্তলাকে কহিলেন, বৎসে! আমরা আর অধিক দূর যাইব না; আমাকে ও সখীদিগকে আলিঙ্গন কর। শকুন্তলা অশ্রুপূর্ণ নয়নে কহিলেন, অনসূয়া প্রিয়ংবদাও কি এই খান হইতে ফিরিয়া যাইবে? ইহারা সে পর্য্যন্ত আমার সঙ্গে যাউক। কণ্ব কহিলেন, না বৎসে! ইহাদের বিবাহ হয় নাই, অতএব সে পর্য্যন্ত যাওয়া ভাল দেখায় না; গৌতমী তোমার সঙ্গে যাবেন। শকুন্তলা পিতাকে আলিঙ্গন করিয়া, গদগদ স্বরে কহিলেন, তাত!