পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
৬৯

 এবম্প্রকার কথোপকথন হইতেছে, এনন সময়ে সোমরাত, তপস্বীদিগকে সমভিব্যাহারে করিয়া, উপস্থিত হইলেন। রাজা, দুর হইতে দেখিতে পাইয়া, আসন হইতে গাত্রোত্থান করিলেন এবং তাঁহাদের আগমনপ্রতীক্ষায় দণ্ডায়মান রহিলেন। তদ্দর্শনে সোমরাত তপস্বীদিগকে কহিলেন, ঐ দেখুন, সসাগরা সদ্বীপা পৃথিবীর অদ্বিতীয় অধিপতি, আসন পরিত্যাগপূর্ব্বক দণ্ডায়মান হইয়া, আপনাদের প্রতীক্ষা করিতেছেন। শার্ঙ্গরব কহিলেন, নরপতিদিগের এরূপ বিনয় ও সৌজন্য দেখিলে সাতিশয় প্রীত হইতে হয় এবং অত্যন্ত প্রশংসা করিতে ও সাধুবাদ দিতে হয়। অথবা ইহার বিচিত্র কি—তরুগণ ফলিত হইলে ফলভরে অবনত হইয়া থাকে; বর্ষাকালীন জলধরগণ বারিভরে নম্র ভাব অবলম্বন করে; সৎপুরুষদিগেরও প্রথা এই, সমৃদ্ধিশালী হইলে অনুদ্ধত স্বভাব হয়েন।

 শকুন্তলার দক্ষিণ চক্ষু স্পন্দিত হইতে লাগিল। তিনি সাতিশয় শঙ্কিতা হইয়া গৌতমীকে কহিলেন, পিসি! আমার ডানি চোক নাচিতেছে কেন? গৌতমী কহিলেন, বৎসে! শঙ্কিতা হইও না, পতিকুলদেবতারা তোমার মঙ্গল করিবেন। যাহা হউক, শকুন্তলা তদবধি, মনে মনে নানাপ্রকার আশঙ্কা করিতে লাগিলেন ও অত্যন্ত আকুলহৃদয় হইলেন।

 রাজা শকুন্তলাকে দেখিয়া কহিতে লাগিলেন, এই অবগুণ্ঠন-