পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
৭৩

অবনতমুখী দেখিয়া, গৌতমী শকুন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, বৎসে! লজ্জিত হইও না; আমি তোমার মুখের ঘোমটা খুলিয়া দিতেছি, তাহা হইলে মহারাজ তোমায় চিনিতে পারিবেন। এই বলিয়া, তিনি শকুন্তলার মুখের অবগুণ্ঠন খুলিয়া দিলেন। রাজা তথাপি চিনিতে পারিলেন না, বরং পূর্ব্বাপেক্ষায় সমধিক সংশয়ারূঢ় হইয়া, মৌনাবলম্বন করিয়া রহিলেন। তখন শর্ঙ্গরব কহিলেন, মহারাজ! এরূপ মৌনভাবে রহিলেন কেন? রাজা কহিলেন, মহাশয়! কি করি বলুন; অনেক ভাবিয়া দেখিলাম, কিন্তু ইহার পাণিগ্রহণ করিয়াছি বলিয়া কোনও ক্রমেই স্মরণ হইতেছে না; সুতরাং, কি প্রকারে ইহারে ভার্য্যা বলিয়া পরিগ্রহ করি; বিশেষতঃ, ইনি এক্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হইয়াছেন।

 রাজার এই বচনবিন্যাস শ্রবণ করিয়া, শকুন্তলা মনে মনে কহিতে লাগিলেন, হায়, কি সর্ব্বনাশ! এক বারে পাণিগ্রহণেই সন্দেহ! রাজমহিষী হইয়া, অশেষ সুখসম্ভোগে কালহরণ করিব বলিয়া, যত আশা করিয়াছিলাম, সমুদায় এক কালে নির্মূল হইল। শার্ঙ্গরব কহিলেন, মহারাজ! বিবেচনা করুন, মহর্ষি কেমন মহানুভবতা প্রদর্শন করিয়াছেন। আপনি তাঁহার অগাচরে তদীয় অনুমতিনিরপেক্ষ হইয়া তাঁহার কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন; তিনি, তাহাতে রোষ বা অসন্তোষ প্রদর্শন না করিয়া, বরং সন্তোষ প্রদর্শন করিয়াছেন এবং

১০