পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
৭৯

বলিয়া তাঁহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন। গৌতমী কিঞ্চিৎ থামিয়া কহিলেন, বৎস শার্ঙ্গরব! শকুন্তলা কঁদিতে কাঁদিতে। আমাদের সঙ্গে আসিতেছে; দেখ, রাজা প্রত্যাখ্যান করিলেন, এখানে থাকিয়া আর কি করিবে বল? আমি বলি, আমাদের সঙ্গেই আসুক। শার্ঙ্গরব শুনিয়া, সরোষ নয়নে মুখ ফিরাইয়া, শকুন্তলাকে কহিলেন, আঃ পাপীয়সি! স্বাতন্ত্র্য অবলম্বন করিতেছ? শকুন্তলা ভয়ে কাঁপিতে লাগিলেন। তখন শার্ঙ্গরব শকুন্তুলাকে কহিলেন, দেখ, রাজা যেরূপ কহিতেছেন, যদি তুমি যথার্থ সেরূপ হও, তাহা হইলে তুমি স্বেচ্ছাচারিণী হইলে; তাত কণ্ব আর তোমার মুখাবলোকন করিবেন না। আর যদি তুমি মনে মনে আপনাকে পতিব্রতা বলিয়া জান, তাহা হইলে পতিগৃহে থাকিয়া দাসীবৃত্তি করাও তোমার পক্ষে শ্রেয়ঃ। অতএব এই খানেই থাক, আমরা চলিলাম।

 এই রূপে তপস্বীদিগকে প্রস্থান করিতে দেখিয়া, রাজা শার্ঙ্গরবকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, মহাশয়! আপনি উহাকে মিথ্যা প্রবঞ্চনা করিতেছেন কেন? পুরুরংশীয়েরা প্রাণান্তেও পরবনিতাপরিগ্রহে প্রবৃত্ত হয় না; চন্দ্র কুমুদিনীকেই প্রফুল্ল করেন, সুর্য্য কমলিনীকেই উল্লাসিত করিয়া থাকেন। তখন শার্ঙ্গরব কহিলেন, মহারাজ! আপনি, পরকীয় মহিলা আশাঙ্কা করিয়া, অধর্ম্মভয়ে শকুন্তলাপরিগ্রহে পরাঙ্মুখ হইতে-