পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৮৭

করিয়াছিলেন, সেই কাতর দৃষ্টিপাত আমার বক্ষঃস্থলে বিষদিগ্ধ শল্যের ন্যায় বিদ্ধ হইয়াছে। আমি সেই সময়ে তাঁহার প্রতি যে ক্র‌ুরের ব্যবহার করিয়াছি, তাহা মনে করিয়া, আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া যাইতেছে; মরিলেও আমার এ দুঃখ যাবে না।

 মাধব্য, রাজাকে নিতান্ত কাতর দেখিয়া, আশ্বাসপ্রদানার্থে কহিলেন, বয়স্য! অত কাতর হইও না; কিছু দিন পরে পুনরায় শকুন্তলার সহিত সমাগম হইবেক। রাজা কহিলেন, বয়স্য! আমি এক মুহুর্ত্তের নিমিত্তেও সে আশা করি না। আর আমি প্রিয়ার দর্শন পাইব না। এ জন্মের মত আমার সকল সুখ ফুরাইয়া গিয়াছে। নতুবা তৎকালে আমার তেমন বুদ্ধি ঘটিল কেন? মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! কোনও বিষয়েই নিতান্ত হতাশ হওয়া উচিত নয়। ভবিতব্যের কথা কে বলিতে পারে? দেখ, এই অঙ্গুরীয় যে পুনরায় তোমার হতে আসিবে, কাহার মনে ছিল।

 ইহা শুনিয়া, অঙ্গুরীয়ে দৃষ্টিপাতপূর্ব্বক রাজা উহাকে সচেতন বোধে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, অঙ্গুরীয়! তুমিও আমার মত হতভাগ্য, নতুবা প্রিয়ার কমনীয় কোমল অঙ্গুলীতে স্থান পাইয়া, কি নিমিত্ত পুনরায় সেই দুর্লভ স্থান হইতে ভ্রষ্ট হইলে? মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! তুমি কি উপলক্ষে তাঁহার অঙ্গুলীতে অঙ্গুরীয় পরাইয়া দিয়াছিলে? রাজা কহিলেন, রাজধানীপ্রত্যাগমন-