পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৮৯

তাপানলে আমার হৃদয় দগ্ধ হইয়া যাইতেছে, দর্শন দিয়া প্রাণরক্ষা কর।

 রাজা শোকাকুল হইয়া এইরূপ বিলাপ করিতেছেন, এমন সময়ে চতুরিকানাম্নী পরিচারিকা এক চিত্রফলক আনয়ন করিল। রাজা চিত্তবিনোদনার্থে ঐ চিত্রফলকে স্বহস্তে শকুন্তলার প্রতিমূর্ত্তি চিত্রিত করিয়াছিলেন। মাধব্য দেখিয়া বিস্ময়োৎফুল্ল লোচনে কহিলেন, বয়স্য! তুমি চিত্রফলকে কি অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করিয়াছ! দেখিয়া কোনও মতে চিত্র বোধ হইতেছে না। আহা মরি, কি রূপ লাবণ্যের মাধুরী! কি অঙ্গসৌষ্ঠব! কি অমায়িক ভাব! মুখারবিন্দে কি সলজ্জ ভাব। প্রকাশ পাইতেছে! রাজা কহিলেন, সখে! তুমি প্রিয়াকে দেখ নাই, এই নিমিত্ত আমার চিত্রনৈপুণ্যের এত প্রশংসা করিতেছ। যদি তাঁহারে দেখিতে, চিত্র দেখিয়া কখনই সন্তুষ্ট হইতে না। তাঁহার অলৌকিক রূপ লাবণ্যের কিঞ্চিৎ অংশমাত্র এই চিত্রফলকে আবির্ভূত হইয়াছে। এই বলিয়া, পরিচারিকাকে কহিলেন, চতুরিকে! বর্ত্তিকা ও বর্ণপাত্র লইয়া আইস; অনেক অংশ চিত্রিত করিতে অবশিষ্ট আছে।

 এই বলিয়া, চতুরিকাকে বিদায় করিয়া, রাজা মাধব্যকে কহিলেন, সখে! আমি, স্বাদুশীতলনির্মলজলপূর্ণ নদী পরিত্যাগ কারয়া, এক্ষণে শুষ্ককণ্ঠ হইয়া মৃগতৃষ্ণিকায় পিপাসা শান্তি

১২