পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
শকুন্তলা।

করিতে উদ্যত হইয়াছি; প্রিয়াকে পাইয়া পরিত্যাগ করিয়া, এক্ষণে চিত্রদর্শন দ্বারা চিত্তবিনোদনের চেষ্টা পাইতেছি। মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! চিত্রফলকে আর কি লিখিবে? রাজা কহিলেন, তপোবন ও মালিনীনদী লিখিব; যে রূপে হরিণগণকে তপোবনে সচ্ছন্দে ইতস্ততঃ ভ্রমণ করিতে এবং হংসগণকে মালিনীনদীতে কেলি করিতে দেখিয়াছিলাম, সে সমুদয়ও চিত্রিত করিব; আর প্রথমদর্শনদিবসে প্রিয়ার কর্ণে শিরীষপুষ্পের যেরূপ আভরণ দেখিয়াছিলাম, তাহাও লিখিব।

 এইরূপ কথোপকথন হইতেছে, এমন সময়ে প্রতিহারী আসিয়া রাজহস্তে এক পত্র সমর্পণ করিল। রাজা পাঠ করিয়া অত্যন্ত দুঃখিত হইলেন। মাধব্য জিজ্ঞাসা করিলেন, বয়স্য! কোথাকার পত্র, পত্র পাঠ করিয়া, এত বিষন্ন হইলে কেন। রাজা কহিলেন, বয়স্য! ধনমিত্র নামে এক সাংযাত্রিক সমুদ্রপথে বাণিজ্য করিত। সমুদ্রে নৌকা মগ্ন হইয়া তাহার প্রাণ বিয়োগ হইয়াছে। সে ব্যক্তি নিঃসন্তান। নিঃসন্তানের ধনে রজার অধিকার। এই নিমিত্ত, অমাত্য আমায় তাহার সমুদয় সম্পত্তি আত্মসাৎ করিতে লিখিয়াছেন। দেখ, বয়স্য! নিঃসন্তান হওয়া কত দুঃখের বিষয়! নামলোপ হইল, লোপ হইল, এবং বহু কষ্টে বহু কালে উপার্জ্জিত ধন অন্যের হস্তে গেল। ইহা অপেক্ষা আক্ষেপের বিষয় আর কি হইতে