পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১১

দিকে এ দিকে; এই শব্দ রাজার কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইল। রাজা শ্রবণ করিয়া কহিতে লাগিলেন, বৃক্ষবাটিকার দক্ষিণাংশে যেন স্ত্রীলোকের আলাপ শুনা যাইতেছে; কি বৃত্তান্ত অনুসন্ধান করিতে হইল।

 এই বলিয়া, কিঞ্চিৎ গমন করিয়া, রাজা দেখিতে পাইলেন, তিনটি অল্পবয়স্কা তপস্বিকন্যা, অনতিবৃহৎ সেচনকলস কক্ষে লইয়া, আলবালে জলসেচন করিতে আসিতেছে। রাজা, তাহাদের রূপের মাধুরীদর্শনে চমৎকৃত হইয়া, কহিতে লাগিলেন, ইহারা আশ্রমবাসিনী; ইহার যেরূপ, এরূপ রূপবতী রমণী আমার অন্তঃপুরে নাই। বুঝিলাম, আজি উদ্যানলতা সৌন্দর্য্যগুণে বনলতার নিকট পরাজিত হইল। এই বলিয়া, তরুচ্ছায়ায় দণ্ডায়মান হইয়া, রাজা অনিমিষ নয়নে তাঁহাদিগকে অবলোকন করিতে লাগিলেন।

 শকুন্তলা, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা নাম্নী দুই সহচরীর সহিত, বৃক্ষবাটিকাতে উপস্থিত হইয়া, আলবালে জলসেচন করিতে আরম্ভ করিলেন। অনসূয়া পরিহাস করিয়া শকুন্তলাকে কহিলেন, সখি শকুন্তলে! বোধ করি, তাত কণ্ব তোমা অপেক্ষাও আশ্রমপাদপদিগকে ভাল বাসেন। দেখ, তুমি নবমালিকাকুসুমকোমলা, তথাপি তোমায় আলবালজলসেচনে নিযুক্ত করিয়াছেন। শকুন্তলা ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, সখি অননুয়ে! কেবল