পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८बखििक्तः । কোথায় ছিলি রে কেষ্ট ? কেষ্ট চুপ করিয়া রহিল। কাদম্বিনী ভয়ানক রাগিয়া বলিলেন, বঙ্গ শীগগির। কেই তথাপি মৌন হুইয়া রহিল। মৌন থাকিলে যাহাঁদের রাগ পড়ে, কাদম্বিনী সে এ দলের নহেন। অতএব কথা বলাইবার জন্ত তিনি যতই জেঙ্গ করিতে লাগিলেন, বলাইতে না পারিয়া তাহার ক্রোধ এবং রোথ ততই চড়িয়া উঠিতে লাগিল। অবশেষে পাচুগোপালকে ভাকিয় তাহার দুই কান পুনঃ পুনঃ মলাইয়া দিলেন এবং তাহার জন্য রাত্রে ইাড়িতে চাল লইলেন না । আঘাত যতই গুরুতর হোক, প্রতিহত হইতে না পারিলে লাগে না । পৰ্ব্বতশিখর হইতে নিক্ষেপ করিলেই হাত-পা ভাঙে না, ভাঙে শুধু তখনই—যখন—পদদলস্পষ্ট কঠিনভূমি সেই বেগ প্রতিরোধ করে। ঠিক তাহাই হইয়াছিল কেষ্টর। মায়ের মরণ যখন পায়ের নীচে নির্ভরশ্বলটুকু তাহার একেবারে বিলুপ্ত করিয়া দিল, তখন হইতে বাহিরের কোন আঘাতই তাহাকে আঘাত করিয়া ধূলিসাৎ করিয়া দিতে পারিত না । সে দুঃখীর ছেলে, কিন্তু কখনও দুঃখ পায় নাই । লাঞ্ছনা-গঙ্গনার সহিত তাহার পূর্বপরিচয় ছিল না, তথাপি এখানে আসা অবধি কাদম্বিনীর দেওয়া কঠোর দুঃখকষ্ট সে যে অনায়াসে সহ করিতে পারিতেছিল, সে শুধু পায়ের তলায় অবলম্বন ছিল না বলিয়াই। কিন্তু আজ পারিল না। জাজ সে হেমাঙ্গিনীর মাতৃস্নেহের স্বকঠিন ভিত্তির উপর উঠিয়া দাড়াইয়াছিল, তাই আজিকার এই অত্যাচার অপমান তাহাকে একেবারে ব্যাকুল করিয়া দিল । মাতাপুত্র নিরপরাধ নিরাশ্রয় শিশুকে শাসন করিয়া, লাঞ্ছনা করিয়া, অপমান করিয়া, দণ্ড দিয়া, চলিয়া গেলেন, সে অন্ধকার ভূমিশয্যায় পড়িয়া আজ অনেকদিনের পর আবার মাকে স্মরণ করিয়া, মেজদির নাম করিয়া ফুলিয়া ফুলিয়া কাদিতে লাগিল! পরদিন সকালে কেষ্ট হঠাৎ গুটি গুটি ঘরে ঢুকিয়া হেমাঙ্গিনীর পায়ের কাছে বিছানার একপাশে আলিয়া বসিল । হেমাঙ্গিনী পা দুইটি একটু গুটাইয়া লইয়া সস্নেহে বলিলেন, দোকানে যাস নি কেষ্ট ? এইবার যাব। দেরী করিসনে দাদা, এইবেলা যা, নইলে এক্ষুণি আবার গালাগালি করবে। কেষ্টর মুখ একবার জারজ, একবার পাণ্ডুর হইল। যাট, বলিয়া সে উঠিয় দাড়াইল। একবার ইতস্ততঃ করিয়া কি একটা বলিতে গিয়া আবার চুপ করিল। age