পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুভদ পয়সাগুলি হাতে বেশ করিয়া গুছাইয়া লইয়া হারাণচন্দ্র একটু জোর হাসিয়া বললেন, কালই আমি এসব শোধ করে দেব। শুভদা অন্তমনস্কভাবে ঘাড় নাড়িল। সে বিলক্ষণ জানিত, তাহার স্বামীর অর্ধেক

  • কথার কোন অর্থই থাকে না । এখন চলিয়া যাইতেছে দেখিয়া শুভদা বলিল, এখন

কোথাও যেয়ো না—একটু শুয়ে থাক । হারাণচন্দ্র মুখ ফিরাইলেন—তা কি হয় ? ঘরে বসে থাকলে কি আমার চলে ? রাজ্যের কাজ আমার মাথার উপর পড়ে আছে। তবে যাও— তিনি চলিয়া গেলে শুভদা বাক্স খুলিল। আর একটি টাকা মাত্র আছে। বিন্দুবাসিনী সেদিন যাহা দিয়া গিয়াছিল তাহ ফুরাইয়া আসিয়াছে। এই একটি টাকা মাত্র তাহদের সম্বল। শুভদা বাক্সের একটি নিভৃত কোনে তাহা লুকাইয়া রাখিয়া মাধবের কাছে আসিয়া বসিল । as মা, কখন বাবা বেদান আনবেন ? সন্ধ্যার সময় । সন্ধ্যা আসিল, রাত্রি হইল—তথাপি হারাণচন্দ্রের দেখা নাই। মাধব অনেকবার খোজ লইল, অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিল, তাহার পর কাদিতে লাগিল । শুভদা কাছে আসিয়া বসিল ৷ ললনা অনেক করিয়া ভুলাইবার চেষ্টা করিল ; প্রথমে সে কিছুতেই ভুলিতে চাহে না, অবশেষে শ্রান্ত-মনে অবসন্ন শরীরে অনেক রাত্রে ঘুমাইয়া পড়িল। রাত্রি ভোর না হইতেই সে আবার উঠিয়া বসিল—ম, আমার ডালিম এনেছে । শুভদা চক্ষের জল চাপিয়া বলিল, ডালিম তোমাকে খেতে নাই। কেন ? খেলে অমুখ হবে । সে উঠিয়া বসিয়াছিল, আবার গুইয়া পড়িল । পরদিন দ্বিপ্রহর অতীত হইলে হারাণচন্দ্র বাটী আসিলেন। রাসমণি য়াগ করিয়া একটা কথাও কহিলেন না। ললনা পা ধুইবার জল আনিয়া দিল, স্নান করিবার উপকরণ, ইকাতে জল ভরিয়া তামাক সাজিয়া দিল। হারাণচন্দ্র স্নানাহিক সমাপ্ত করিয়া আহার করিলে, শুভদা ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করিল, মাধবের বেঙ্গানা এনেচ ? ঐ যা—আহা-হা—পকেটে পয়গাগুলো রেখেছিলাম, ছেড়া পকেটে সমস্ত পয়গা 3\ }