পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুভদ যখন চোখের জল ফেলিয়েচে, তখন শাস্তি কি হবে না ? তুই দেখিস, আমি বললাম—- শুভদা তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, ঠাকুরঝি, বিন্দু অমন হঠাৎ শ্বশুরবাড়ি চলে গেল কেন ? ওর শ্বশুরের নাকি রাতারাতি কলেরা হয়েছিল। তা তুই এখন সংসারের কিরকম বন্দোবস্ত করবি ? আমি আর কি করব ? ঈশ্বর যা করবেন তাই হবে। কৃষ্ণঠাকুরাণী একটু দীর্ঘশ্বাস মোচন করিয়া বলিলেন, তা ত হবেই। কিন্তু ভাবনার উপর ভাবনা হচ্চে এই তোর ছোট মেয়েটা । ক্রমে সে বড় হয়ে উঠল—এখন তার বিয়ে না দিলে ভালও দেখাবে না বটে, আর লোকেও পাচ কথা বলবে । তার কিছু উপায় হচ্চে ? শুভদা যখন স্নানমূখে দীর্ঘশ্বাস ফেলিতেছিল, তখন ললনা সেস্থানে আসিয়া উপস্থিত হইল। ছলনার কথা সে কতক শুনিতে পাইয়াছিল, এবং কক্কক অনুমান করিয়া লইয়া বেশ বুঝিল যে, স্বসময়ই হোক, আর অসময়ই হোক, বাঙালীর ঘরে মেয়ের বিবাহ না দিলে চলিবে না ; সম্ভবতঃ জাতি যাইবে । ఫి শুক্ল একাদশী রজনীর প্রায় দ্বিপ্রহর অতীত হইয়া গিয়াছে। ভাগীরথী-তীরের অৰ্দ্ধবনাবৃত একটা ভগ্ন শিবমন্দিরের চাতালের উপর একজন দ্বাবিংশ-বর্ষীয় যুবক যেন কাহার জন্য চাহিয়া বহুক্ষণ হইতে বসিয়া আছে । যুবকের নাম সারদাচরণ রায় । হলুদপুর গ্রামের একজন বর্ধিষ্ণু লোকের একমাত্র সন্তান। লেখাপড় কতদূর হইয়াছিল বলিতে পারি না, কিন্তু বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান এবং কৰ্ম্মদক্ষ তাহ বলিতে পারি। বৃদ্ধ পিতার সমস্ত সাংসারিক কৰ্ম্ম নিজেই নিৰ্ব্বাহ করিয়া আসিতেছে । সারদাচরণের জননী জীবিত নাই। যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন, ততদিন হারাণ মুখুয্যেদের বাটীর সহিত ইহাদের খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ত ছিল ; রাসমণি ও সারদার জননী উভয়ের অত্যন্ত প্রণয় ছিল । এখন তিনিও গত হইয়াছেন, আত্মীয়তা বন্ধুত্বও গত হইয়াছে। বিশেষ সারদাচরণের পিতা হরমোহনবাবু দরিদ্রের সহিত কোনরূপ সম্বন্ধ রাখা যুক্তিযুক্ত মনে করিতেন না । এইখানে একটু ললনার কথা বলিয়া রাখি , কেননা, তাহার সহিত এ আখ্যায়িকায় আমাদিগের অনেক প্রয়োজন আছে । বালিকা-কাল হইতেই সারদার সহিত তাহার ভাব ছিল, তাহার পর তাহার বিবাহ হয়। হারাণবাবুর অবস্থা তখন 8 S في سسسساتيا