পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুউদী গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় আরো বাগিয়া উঠিলেন ; বলিলেন, তুমি উংছন্ন ধাচ্ছ। সদানন্দ মৃদ্ধ হাসিল ; বলিল, আপনার একটু চেষ্টা করলে না যেতেও পারতাম । তুমি আমার সামনে হতে দূর হও । যে আঙ্কে, বলিয়া সদানন্দ বাহিরে আসিয়া খুব একগাল হাসিয়া লইল, তাহার পর গলা ছাড়িয়া রামপ্রসাদী ধরিল। নিকটে কাঙ্গালীচরণ মাথায় পটলের বোঝা লইয়া হাটে যাইতেছিল, সে চোখে হাসি, মুখে গান দেখিয়া বলিল, কি দাদাঠাকুর, এত আমোদ কিসের ? সদানন্দ হাসিতে হাসিতে বলিল, গাঙ্গুলিমশায়ের বাড়িতে আজ নিমন্ত্রণ ছিল, খুব খেয়েচি । সে বলিল, বটে ! তখন সদানন্দ আজকাল পটলের দর জিজ্ঞাসা করিয়া আর একবার হাসিয়া পূৰ্ব্বত্যক্ত গানটার স্বর গলার মধ্যে বেশ কবিয়া ভজিয়া লইয়া মনের আনন্সে পথ বাহিয়া চলিল, কাঙ্গালীচরণও যথাস্থানে চলিয়া গেল । এখন একটা কথা আছে । কবি বলিয়াছেন, মনেই স্বৰ্গ, মনেই নরক ; সাংসারিক অস্তিত্ব ইহার বড় একটা নাই। এ-কথা সম্পূর্ণ সত্য না হইলেও যে আংশিক সত্য, তাহাতে সন্দেহমাত্র নাই। কারণ হারাণচন্দ্রের যাহা পার্থিব মুখের শেষ সীমা, শুভদা তাহা তেমন উপভোগ করিয়া উঠিতে পারে না । হারণচন্দ্র দু'বেলা পরিতোষে আহার করিতে পান, চাহিলেই দুই-চারি আনা পয়সা স্ত্রীর নিকট কঙ্গ করিতে পারেন, তাহা পরিশোধ করিবার বালাই মাত্র নাই, বাজারের ভিতর দিয়া এখন উন্নত মস্তকে গমনাগমন করেন, কোন গুলিকের নিকট একটি পয়সা মাত্র কঙ্গ নাই, আড্ডাধারী উহার পূর্বপদ সসম্মানে ফিরাইয়া দিয়াছে ; আর চাই কি? তবে যেটুকু বাকী আছে, হারাণচন্দ্র ভাবেন, সদানন্দ আর একটু ক্ষেপিলেই তাহ সমাধান করিয়া ফেলিবেন । গুলির দোকানটা তখন নিজেই কিনিয়া লইবেন, আর কাত্যায়নী ছোটলোক বেটীর গর্ব রীতিমত খৰ্ব্ব করিবেন। তাহার এক বৎসরের খোরাক ঝনাং করিয়া তাহার সম্মুখে আগাম ফেলিয়া দিয়া বলিবেন, ছোটলোক বেটী ! আমাকে হেয় করিস্ ? পুরুষের ভাগ্য আর স্ত্রীলোকের চরিত্র দেবতারা জানেন না, তা তুই কোন ছার। আর ভগবান নদী ; তার বাটীর সম্মুখে যদি আডাম্বর না বসাইত আমার নাম হারাণ নয়। হারাণচন্দ্র এখন গুন গুন স্বরে গলায় স্বর লইয়া সমস্ত বামুলপাড়াটা ঘুরিয়া বেড়ান। কিন্তু শুভদা ? তাহার কি এক ভাবনা ? ভগবান জানেন স্বামী-মুখ গে একদিনের জন্তও পায় নাই ; অন্ততঃ তাহার মনে পড়ে না—সে স্বামীর মুখে অন্ন Ն: bリー〉。