পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন সতীশ অন্ধকারে দেখিতে পাইল না যে, ক্ষণকালের নিমিত্ত উপেন্দ্রর মুখ পাণ্ডুর হইয়া গিয়াছে। সতীশ ব্যথার উপর ব্যথা দিয়া পুনরায় কহিল, খাল খুঁড়ে কুমীর এনে না উপনদী। উপেন্দ্র উত্তর দিতে পারিলেন না। অনেকক্ষ৭ চুপ করিয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন, বাঙলা নভেলের কথা থাকৃ। কিন্তু কিরকম উপদেশ দিতে চাও শুনি ? সতীশ হাসিয়া বলিল, এই দেখ উপীনদী, তুমি রাগ করেচ। তোমাকে উপদেশ আমি দিতে পারিনে—কিন্তু পা ধরে অনুরোধ করতে পারি, ওখানে তোমার গিয়ে কাজ নেই—ওঁরা ভাল লোক নন। ওঁরাটা কারা শুনি ? সতীশ বলিল, রাগ কোরো না উপীনদী, বহুবচনটা ভদ্রতা মাত্র। আমি হারানবাবুর কথা বলিনি—তিনি ভাল-মন্দের বাইরে গিয়েচেন । তার মাকেও চোখে দেখিনি, আমি তৃতীয় ব্যক্তির উল্লেখ করেচি। يمېد তৃতীয় ব্যক্তির অপরাধ ? দেখ সতীশ, তোমার বাবা যদি আর একজনকে তার সৰ্ব্বস্ব লিখে দেবার সঙ্কল্প করেন, তুমি বোধ করি খুব আনন্দ কর না ? না ; আশীৰ্ব্বাদ করো উপনদী, বাবার যেন সে দরকার না হয় । তিনি আমাকে তার ভাল ছেলে বলে আনন্দ করেন না জানি, আমি তার মন্দ ছেলে, কিন্তু এই মন্দ ছেলেটি তার মৃত্যুর সময় সাজগোজ করে টিপ পরে ঘুরে বেড়াবে না। আজ আমার বাচালতা মাপ কর উপীনদা, কিন্তু তোমার একটুখানি চোখ থাকলেও দেখতে পেতে, হারানবাবুর এ-রকম প্রস্তাব কেবল খেয়াল নয়, বরং অনেকদিনের অনেক চিস্তার ফল । - সতীশ পুনশ্চ বলিল, তুমি মনে কোরো না উপীনদী, হারানবাবু তোমাকে সমস্ত ভারাপণ করবার সময়ে তার স্ত্রীর কথাটাই ভুলে ছিলেন, কিংবা লজ্জায় বলতে পারছিলেন না। বরং আমার বিশ্বাস, তুমি যদি উল্লেখ না করতে, তিনি স্বেচ্ছায় কোন কথাই বলতেন না । উপেন্দ্র মনে মনে যৎপরোনাস্তি বিরক্ত হইতে থাকিলেও এতক্ষণ পৰ্য্যন্ত মৌন হুইয়া শুনিতেছিলেন । কিন্তু পরস্ত্রী সম্বন্ধে এই সমস্ত সন্দিগ্ধ ইঙ্গিত তাহার অসহ হইয়া উঠিল। কঠোরস্বরে বলিয়া উঠিলেন, সতীশ, তুমি যে এত ইতর হয়ে গেছ, আমার ধারণা ছিল না; বোধ করি, তুমি আলাপ-পরিচয়েরও নীচে গেছ। সতীশ হাসিল । বলিল, ইতর কিসে? মন্দকে মন্দ বলচি, এইজন্যে ? ভাল হোক মন্দ হোক, তোমার অধিকার ? অধিকার আবার কি! ওটা ইংরাজি কথা, বাঙলায় ওর মানে হয় না। আমাদের 命》、