পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন উত্তর পাইল, এমন কিছুই করে নাই, যাহাতে নূতন করিয়া তাহাকে দোষ দেওয়া যায় । প্রশ্ন করিল, এতবড় অবিশ্বাসের কাজ করিল কিজান্ত ? উত্তর পাইল, কোন বিশ্বাস তোমাকে সে দিয়াছিল, তাই আগে বল ? সতীশ কিছুই বলিতে পারিল না । বস্তুতঃ সে ত কোন মিথ্যা আশাই দেয় নাই। একদিনের জন্তও ছলনা করে নাই । বরং পুনঃ পুনঃ সতর্ক করিয়াছে, শুভ কামনা করিয়াছে, ভগিনীর অধিক স্নেহ-যত্ন করিয়াছে। সেই রাত্রির কথা সে স্মরণ করিল। সেদিন নিষ্ঠুর হইয় তাহাকে ঘর হইতে বাহির করিয়া দিয়া রক্ষা করিয়াছিল। কে এমন করিতে পারিত ! কে নিজের বুকে শেল পাতিয়া লইয়া তাঁহাকে অক্ষত রাখিত ? সতীশের চোখের পাতা ভিজিয়া উঠিল, কিন্তু এ সংশয় তাহার কিছুতেই ঘুচিতে চাহিল না যে, এই প্রশ্নোত্তর-মালার কোথায় যেন একটা ভুল থাকিয়া যাইতেছে । সে আবার প্রশ্ন করিল, কিন্তু তাকে যে ভালবাসিয়াছি । উত্তর পাইল, কেন বাসিলে ? কেন জানিয়া বুঝিয়া পঙ্কের মধ্যে নামিলে ? প্রশ্ন করিল, তা জানিনে। পদ্ম তুলিতে গেলেও ত পাক লাগে । উত্তর পাইল, ওটা পুরাতন উপমা—কাজে লাগে না । মানুষ ঘরে আসিবার সময় পাক ধুইয়া পদ্ম লইয়া আসে। তোমার পদ্মই বা কি, আর এ পাক কোথায় ধুইয়াই বা ঘরে আসিতে ? প্রশ্ন করিল, না হয়, নাই ঘরে আসিতাম। উত্তর পাইল, ছিঃ ! ও মুখেও আনিও না । তাহার পরে কিছুক্ষণ পর্য্যন্ত সে স্তন্ধ হইয়া নক্ষত্র-খচিত কালো আকাশের পানে চাহিয়া হঠাৎ বলিয়া উঠিল, আমি ত আশা ছাড়িয়াই দিলাম। তাহাকে পাইতেও চাহি না, কিন্তু আমাকে সে এমন করিয়া অপমান করিল কেন ? একবার জিজ্ঞাসা করিল না কেন ? কি দুঃখে সে এ-কাজ করিতে গেল ? টাকার লোভে করিয়াছে, এ-কথা যে কোনমতেই ভাবিতে পারি না ? বিপিনের মত অনাচারী মদ্যপকে সে মনে মনে ভালবাসিয়াছিল, এ-কথা বিশ্বাস করিব কি করিয়া ? তবে কেন ? গঙ্গার শীতল বাতাসে তাহার শীত করিতে লাগিল। সে র্যাপারটা আগাগোড়া মুড়িয়া দিয়া চোখ বুজিয়া বেঞ্চের উপর গুইয়া পড়িতেই সাবিত্রীর মুখ উজ্জল হইয়া ফুটিয়া উঠিল । পতিতার কোন কালিমাই ত সে-মুখে নাই! গৰ্ব্বে দীপ্ত, বুদ্ধিতে স্থির, স্নেহে স্নিগ্ধ, পরিণত যৌবনের তারে গভীর অথচ, রসে লীলা চঞ্চল—সেই মুখ, 》●● و 3-سن د: