পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন ত বেশী আস্থা রাখিনে। সদ্ধ করতে পারাও যে একটা ক্ষমতা, অনাহুত সাহায্য করবার লোভ সংবরণ করতে পারাও যে অবস্থাবিশেষে প্রয়োজন, সেট ও বোৰেই নী I ও যেন সেকালের ইউরোপের নাইট, একালে বাঙলাদেশে এসে জন্মেছে। জ্যোতিষ হাসিয়া বলিলেন, কিন্তু যাই বল, শুনে শ্রদ্ধা হয়। উপেজ বলিলেন, হয়ও না। সংসারে বাস করতে গেলে অনেক ছোট-খাটো মন্দ জিনিসকে অগ্রাহ করতে হয়—এ শিক্ষা ওর আজো হয়নি। কোনদিন হবে কি না জানি না, কিন্তু যদি না হয়, শেষকালের ফলটা মধুর হবে না। ওরও না, ওর আত্মীয়-বন্ধুদেরও না । জ্যোতিষ বললেন, কিন্তু ওর আত্মীয়-বন্ধু, তুমি কেন শেখাও না ? & উপেন্দ্রর মুখে হাসিয়া ফুটিয়া উঠিল। বলিলেন, আমি ওর বন্ধু বটে, কিন্তু এ শিক্ষার ভার এরকম বন্ধুর উপরে নয়। যিনি সব বন্ধুর বড় বন্ধু হবেন, যিনি সমস্ত আত্মীয়ের উপর আত্মীয় হবেন, এ বিষ্ঠা হয় তিনি শেখাবেন, না হয় চিরদিন ওকে অশিক্ষিত হয়েই থাকতে হবে। সরোজিনী এতক্ষণে নীরবে স্থির হইয়া শুনিতেছিল, এখন মুখ ফিরাইয়া বোধ করি একটুখানি হাসি গোপন করিল। উপেন্দ্র বলিলেন, কিন্তু সতীশের কথা আজ এই পৰ্য্যন্ত । আমাকে উঠতে হবে, খান-দুই চিঠি লেখবার আছে। জ্যোতিষের জরুরি কাগজপত্র দেখিবার ছিল, তাহারও বসিবার জো ছিল না, তাই তিনিও উঠি উঠি করিতেছিলেন। কিন্তু সকলের পূর্বেই উঠিয়া পড়িল সরোজিনী । একবার মনে হইল সে উপেন্দ্রকে কি কথা যেন বলিতে চাহিল, কিন্তু শেষে কিছুই বলিল না, কাহাকেও একটি ক্ষুদ্ৰ নমস্কার পর্য্যন্ত করিল না—অন্যমনস্কের মত ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল। আজকার সভা যেমন করিয়া জমিবার কথা ছিল, তেমন করিয়া জমিতে পারে নাই বটে, কিন্তু ভাঙ্গিল আরো বিশ্ৰী করিয়া । উপেন্দ্র কিছুই জানিতেন না, তিনি কিছুই জানিলেন না । ծ օք