পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ প্রত্যুত্তরে দিবাকর একটা কথাও কহিতে পারিল না—শুধু তাহার দুই চক্ষু জলে ভরিয়া গেল । কিরণময়ী উঠিয়া বসিয়া আঁচল দিয়া তাহার চোখ মুছাইয়া দিয়া কছিল, ছিঃ ! কান্না কেন ভাই ! বোঁদি, আমি যে নিরুপায়! ছোড়দা যে আজ সকালেই আমাকে চলে ষেতে বলেচেন ! উপেন্দ্রর নামমাত্রই কিরণময়ী ক্রোধে অন্ধ হইয়া কহিল, কে ছোড়দা ! কে সে ! সে কি আমার চেয়েও তোমার বেশী আপনার ? তোমাকে না দেখতে পেলে কি তার বুক ফেটে যায় ? না ঠাকুরপো, সংসারে কারু সাধ্য নেই আর আমাদের আলাদা করে রাখে । বাইরে গাড়ি দাড়িয়ে আছে—চল আমরা যাই । কোথায় বোঁদি ? আমি যেখানে নিয়ে যাব সেইখানে ঠাকুরপো । আচ্চা চল, বলিয়া দিবাকর উঠিতে উষ্ঠত হইল। একবার তাহার মনে হইল, সে বুঝি জাগিয়া নাই, ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখিতেছে। কিন্তু পরক্ষণেই কিরণময়ীর অনুসরণ করিয়া ধীরে ধীরে ঘরের বাহিরে আসিয়া দাড়াইল । 姆” S8 .ক্টাচপোক যেমন করিয়া পতঙ্গকে টানিয়া আনে, তেমনি করিয়া ছুর্নিবার স্বাস্থ-মন্ত্রে কিরণময়ী অৰ্দ্ধ-সচেতন বিমূঢ়-চিত্ত হতভাগ্য দিবাকরকে জাহাজ-ঘাটে টানিয়া আনিয়া উপস্থিত করিল এবং টিকিট কিনিয়া আরকান যাত্রী-জাহাজে চড়িয়া বসিল । এ জাহাজে ভীড় না থাকায়, জাহাজের কর্তৃপক্ষ স্বামী-স্ত্রী জানিয়া একটা কেবিনের মধ্যেই দিবাকর ও কিবৃণময়ীর স্থান নির্দিষ্ট করিয়া দিলেন । এইখানে কিরণময়ীকে বসাইয়া দিয়া দিবাকর ডেকের একটা নিভৃত অংশে রেলিং ধরিয়া চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। ক্রমে ডেকের প্যাসেঞ্জারের ভীড় কমিয়া গেলে, কুলিদের গোলমাল খামিয়া আসিল । নোঙ্গর তোলার কর্কশ শব্দে জাহাজের সন্মুখ-দিকটার মত দিবাকরের বুকের ভিতরটাও কঁাপিতে লাগিল। ক্ষণকালেই জাহাজ ভাগীরীর জানুয়ারি তালিয়া আসিল এবং অকুল সমূত্রে পাড়ি দিবার উদ্দেশে ধীরে ধীরে গতি লক্ষয় করিতে বাগিল। যখন ঠিক বোঝা গেল জাহাজ চলিয়াছে, তখন দিবাকরের দুই চক্ষু জলে ভৱিস্কা গেল এবং সে তাহার দুই করতল মুখের উপরে জোর করিয়া চাপ্রিয়া રાઉ ઉ