পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छब्रिङ्गशैन। তাহাকে আবিষ্কার করিয়াছে, ইহা জ্যোতিষ গল্প করিয়া মাকে শুনাইল। নিজের কস্তার দুর্ঘটনার বিবরণ শুনিয়া তিনি সতীশের মাথায় হাত দিয়া তাহাকে অসংখ্য আশীৰ্ব্বাদ করিলেন, এবং এই উপলক্ষে ইংরাজী শিখিয়া ইংরাজের নকল করাকে অজস্র গালি পাড়িয়া বলিলেন, বাবা সতীশ, তুমি যে মেয়েটাকে রক্ষা করেচ এ-কথা যেন ওরা কোনদিন না ভুলে যায় । কিন্তু জঙ্গলের মধ্যে একলা থাকার দরকার কি সতীশ ? তুমি এ-বাড়ির ছেলে, যতদিন আমরা এখানে আছি, ততদিন এই বাড়িতেই এসে কেন থাকো না ? সতীশ হাসিয়া বলিল, বেশ আছি মা । আমার সেখানে কষ্ট নেই। জগৎতারিণী কহিলেন, কষ্টের জন্ত নয় বাবা, একা থাকার অনেক বিপদ । এবাড়িতে অনেক ঘর খালি পড়ে আছে, তুমি চলে এস। জল-হাওয়া সেখানেও ধী, এখানেও ত তাই । সরোজিনী কহিল, তা হলে ওঁর জাত যাবে মা ! - জগৎতারিণী তখনও ভিতরের কথা জানিতেন না, মনে মনে অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া বলিলেন, তুই ত খুব মেয়ে সরি ! কেন, আমরা কি যে, আমাদের এখানে লোকের জাত যাবে ? না বাবা সতীশ, তুমি ওর কথা বিশ্বাস ক'রো না । আর তাই যদি হবে, উপীন বোঁ নিয়ে আমাদের বাড়িতে অতদিন থেকে গেল কি করে ? তাদের কই জাত গেল না ? তুই আমন মিছে করে ওকে ভয় দেখাসনে বলে দিচ্চি । সরোজিনী মুখ ফিরাইয়া হাসিতে লাগিল ; সতীশ কহিল, না মা, জাত যাবে কেন ? আমি ত প্রায় প্রত্যহই আসি, রাত্রের খাওয়াটাও ত মামার এ-বাড়িতেই হয়। শুনিয়া জগৎতারিণী পুলকিত-চিত্তে বলিতে লাগিলেন, তাই এসে বাবা । অন্ততঃ আমি যে ক'দিন আছি, আমার কাছেই তোমাকে রোজ খেয়ে যেতে হবে । বলিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ খাবার ব্যবস্থা করিতে অন্যত্র চলিয়া গেলে সরোজিনী কহিল, আপনি যে আমাকে গান শেখাবেন বলেছিলেন ? সতীশ কহিল, আমি ত প্রায়ই রোজই আসি, শিখলেই ত পারেন। সরোজিনী বলিল, আপনি এলেই ত সমস্ত ভদ্রলোক আপনার গান শুনতে আসেন—তার মধ্যেই বুঝি শেখা যায় ? সতীশ হাসিয়া কহিল,"নো এ্যাডমিশন' বলে ফটকে দরওয়ান বসিয়ে দিন না কেন ? সরোজিনী বলিল, তার চেয়ে ম{ যা বললেন তাই করুন। সেই জঙ্গলের মধ্যে আর পড়ে থাকবেন না । কিন্তু জঙ্গলে থাকার প্রয়োজন আয় যাহাকেই বলা যাক, সরোজিনীর কাছে বলা চলে না । সতীশ চুপ করিয়া বহিল। ፵ ግዊ