পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झब्रिङ्गशैत्व হয় একদিন পুড়েও ছাই হতে পারবে, কিন্তু একটা অস্পৃগু কুলটাকে ভালবেসে ভগবানের দেওয়া এই মনটার গালে আর কালি মাখিয়ে না। হয় তুমি কালই ও-বাসা ছেড়ে চলে যাও, না হয়, আমি আর ওধারে যাবো না । বলিয়াই সাৰিত্ৰী উত্তরের জন্য প্রতীক্ষামাত্র না করিয়া সশব্দে দরজা বন্ধ করিয়া দিল । సె সতীশ হতবুদ্ধি হইয়া গিয়াছিল। কেন যে সাবিত্রী অবিশ্রাম আকর্ষণ করে, কেনই বা কাছে আসিলে এমন নিষ্ঠুর আঘাত করিয়া দূরে সরাইয়া দেয় সেদিন সারারাত্রি ধরিয়া ভাবিয়াও ইহার একটা অস্পষ্ট কারণও খুজিয়া পাইল না । গত রাত্রির এক ‘ একটা কথা এখন পৰ্য্যন্ত তাহার হাড়ের মধ্যে ঝন ঝন করিয়া বাজিতেছিল ! তাই সে প্রত্যুবেই বাহির হইয়া গেল এবং একটা বাস ঠিক করিয়া আসিয়া মুটে ডাকিয়া জিনিস-পত্ৰ বোঝাই দিতে লাগিল । ব্যাপার দেখিয়া বাসার সকলেই আশ্চৰ্য্য হইল । বেশী হইল বেহারী । সে কাছে আসিয়া আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করিল, বাবু কি তবে বাড়ি যাচ্ছেন। সতীশ তাহার হাতে গোটা-পাচেক টাকা গুজিয়া দিয়া বলিল, না বেহারী, বাড়ি নয় —স্কুলের কাছেই একটা বাসা পেয়েচি, তাই যাচ্ছি। বেহার ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, কিন্তু সে ত এখনো আসেনি বাৰু। সতীশ মুখ না তুলিয়াই কহিল, আসেন ? আচ্ছ, তুহ বিছানাগুলো আমার বেঁধে দে, আমি ততক্ষণ রাখালবাবুর ঘর থেকে একবার আসি । বলিয়াই বাসার দেনা-পাওনা মিটাইয়া দিতে রাখালবাবুর ঘরে চলিয়া গেল। সে ঘরে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন ; বোধ করি এই আলোচনাই চলিতেছিল, কারণ, তাহাকে দেখিয়া সকলেই নিস্তব্ধ হইয়া গেল। রাখাল একটুখানি হাসির চেষ্টা করিয়া বলিলেন, এমন হঠাৎ যে ! সতীশ হাতের টাকাগুলো টেবিলের একধারে রাখিয়া দিয়া বলিল, হঠাৎ একদিন এসেও ছিলাম, হঠাৎ একদিন চলেও যাচ্চি । এই টাকাগুলোতেই বোধ করি হবে, যদি না হয়, হিসেব হয়ে গেলে আমাকে জানাবেন, বাকী টাকা পাঠিয়ে দেব। রাখাল বলিলেন, জানাৰ কোথায় ? আমার স্কুলের ঠিকানায় একখান কার্ড লিখে ফেলে দেবেন, তা হলেই পাব, বলিয়া সতীশ আর কোনও সওয়াল-জবাবের অপেক্ষ না করিয়া বাহির হইয় গেল ।