পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐকান্তু এইখানে ? বেশ যা হোক! তোমার সামনে বসে আমি খাবো কেন ? কখনো দেখেচ খেতে ? দেখিনি, কিন্তু দেখলে দোষ কি ? তা কি হয়। মেয়েদের রাক্ষুসে খাওয়া তোমাদের আমরা দেখতেই বা দেবে। কেন ? ও ফন্দী আজ খাটবে না লক্ষ্মী ! তোমাকে অকারণ উপোস করতে আমি কিছুতেই দেবো না । না খেলে তোমার সঙ্গে আমি কথা কবে না । নাই বা কইলে । আমিও খাব না । রাজলক্ষ্মী হাসিয়া ফেলিল, বলিল, এইবfর জিতেচ। এ আমার সইবে না। ঠাকুর খাবার দিয়ে গেল, ফল-মূল-মিষ্টান্ন। সে নামমাত্র আহার করিয়া বলিল, রতন তোমাকে নালিশ জানিয়েচে আমি খাইনে, কিন্তু কি করে খাব বলে তা ? কলকাতায় এসেছিলুম হারা-মকদ্দমার আপীল করতে। তোমার বাসা থেকে প্রত্যহ রতন ফিরে আসত, আমি ভয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারতুম ন পাছে সে বলে, দেখা হয়েচে, কিন্তু বাবু এলেন না। যে দুর্ব্যবহার করেচি আমার বলবার ত কিছুই নেই । বলবার দরকার ত নেই। তখন বাসায় স্বয়ং উপস্থিত হয়ে কাচপোকা যেমন তেলাপোকা ধরে নিয়ে যায় তেমনি নিয়ে যেতে । কে তেলাপোকা–তুমি ? তাই ত জানি । এমন নিরীহ জীব সংসারে কে আছে ? রাজলক্ষ্মী একমুহূৰ্ত্ত মৌন থাকিয়া বলিল, অথচ তোমাকেই মনে মনে আমি যত ভয় করি এমন কাউকে নয় । এটি পরিহাস । কিন্তু হেতু জিজ্ঞাসা করতে পারি কি ? রাজলক্ষ্মী আবার ক্ষণকাল আমার পানে চাহিয়া থাকিয়া বলিল, তার হেতু তোমাকে আমি চিনি। আমি জানি মেয়েদের দিকে তোমার সত্যিকার আসক্তি এতটুকু নেই, যা আছে তা লোকদেখানো শিষ্টাচার। সংসারে কোন কিছুতেই তোমার লোভ নেই, যথার্থ প্রয়োজনও নেই। তুমি না’ বললে তোমাকে ফেরাব কি দিয়ে ? বলিলাম, একটু ভুল হ’লো লক্ষ্মী। পৃথিবীর একটি জিনিসে আজও লোভ আছে—সে তুমি । কেবল ঐখানে 'না' বলতে বাধে। ওর বদলে দুনিয়ার সব কিছু যে ছাড়তে পারি, শ্ৰীকাস্তের এই জানাটাই আজও তুমি জানতে পারনি । רק gર્ણ->૭