পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বলিলাম, হলে কিন্তু বকশিশ পাবে। রাজলক্ষ্মী সভয়ে বলিল, রক্ষে করে গোসাই, সকলের সম্মুখে যেন বকশিশ দিতে এসো না । তোমার অসাধ্য কাজ নেই। শুনিয়া বৈষ্ণবীর হাসিতে লাগিল, পদ্ম খুশী হইলেই হাততালি দেয়, বলিল, थ-भि-दू-८त-क्रेि । কমললতা তাহার প্রতি সস্নেহে চাহিয়া সহাস্তে কহিল—দূর হ পোড়ারমুখী—চুপ কর । রাজলক্ষ্মীকে কহিল, নিয়ে যাও ত ভাই ওকে, কি জানি হঠাৎ কি একটা বলে বসবে। ঠাকুরের সন্ধ্যারতির পরে কীৰ্ত্তনের আসর বসিল । আজ আলে৷ জলিল অনেকগুলা । মুরারিপুর আখড়া বৈষ্ণবসমাজে নিতান্ত অখ্যাত নয়, নানা স্থান হইতে কীৰ্ত্তনীয়া বৈরাগীর দল আসিয়া জুটিলে এরূপ আয়োজন প্রায়ই হয়। মঠে সৰ্ব্বপ্রকার বাদ্যযন্ত্র মজুত আছে, দেখিলাম সেগুলা হাজির করা হইয়াছে। একদিকে বসিয়া বৈষ্ণবীগণ—সকলেই পরিচিত, অন্যদিকে উপবিষ্ট অজ্ঞাতকুলশীল অনেকগুলি বৈরাগী মূৰ্ত্তি—নানা বয়স ও নানা চেহারার। মাঝখানে সমাসীন বিখ্যাত মনোহরদাস ও তাহার মৃদঙ্গবাদক। আমার ঘরের অধুনা দখলীকার একজন ছোকরা বাবাজী দিতেছে হারমোনিয়ামে স্থর । এই প্রচার হইয়াছে যে কে একজন সন্ত্রাস্তগৃহের মহিল৷ আসিয়াছেন কলিকাতা হইতে—তিনিই গাহিবেন গান। তিনি যুবতী, তিনি রূপসী, তিনি বিত্তশালিনী । তাহার সঙ্গে আসিয়াছে দাস-দাসী, আসিয়াছে বহুবিধ খাদ্যসম্ভার, আর আসিয়াছে কে এক নতুনগোসাই—সে নাকি এই দেশেরই এক ভবঘুরে । মনোহরদাসের কীর্তনের ভূমিকা ও গৌরচঞ্জিকার মাঝমাঝি একসময়ে রাজলক্ষ্মী আসিয়া কমললতার কাছে বসিল । হঠাৎ বাবাজীমশায়ের গলাটা একটু কাপিয়াই সামলাইয়া গেল এবং মৃদঙ্গের বোলটা যে কাটিল না সে নিতান্তই একটা দৈবাতের লীলা। শুধু দ্বারিকাদাস দেয়ালে ঠেস দিয়া যেমন চোখ বুজিয়া ছিলেন তেমনি রহিলেন, কি জানি, হয়ত জানিতেই পারিলেন না কে আসিল আর কে আসিল না। রাজলক্ষ্মী পরিয়া আসিয়াছে একখানি নীলাম্বরী শাড়ি, তাহারি সরু জরির পাড়ের সঙ্গে এক হইয়া মিশিয়াছে গায়ের নীলরঙের জামা। আর সব তেমনি আছে । কেবল সকালের উড়ে-পাণ্ডার পরিকল্পিত কপালের ছাপছোপ এবেলা অনেকখানি মুছিয়াছে—অবশিষ্ট যা আছে সে যেন আশ্বিনের ছেড়াখোড়া মেঘ, নীল আকাশে কখন মিলাইল বলিয়া। অতি শিষ্টশাস্ত মান্থব, আমার প্রতি কটাক্ষেও $ oþr