পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ রাজলক্ষ্মী হাতজোড় করিয়া বলিল, ওর ইচ্ছে উনি জানেন, কিন্তু আমাকে ও আদেশ ক’রো না । আমার ছেলেবেলার সে রাঙা মালা আজও চোখ বুজলে ওর সেই কিশোর গলায় দুলচে দেখতে পাই । ঠাকুরের দেওয়া আমার সেই মালাই চিরদিন থাক দিদি । বলিলাম, কিন্তু সে মালা ত খেয়ে ফেলেছিলাম । রাজলক্ষ্মী বলিল, হাগো রাক্ষস—এইবার আমাকে মৃদ্ধ খাও । এই বলিয়া সে হাসিয়া চন্দনের বাটিতে সব কয়টি আঙুল ডুবাইয়া আমার কপালে ছাপ মারিয়া দিল। 萼 来源 肇 皋 সকালে দ্বারিকাদাসের ঘরে গেলাম দেখা করিতে। তিনি কি একটা গ্রন্থপাঠে নিযুক্ত ছিলেন, আদর করিয়া বলিলেন, এসো ভাই, ব’সে । রাজলক্ষ্মী মেজেতে বসিয়া বলিল, বলবার যে আর সময় নেই গোসাই । অনেক উপদ্রব করেচি, যাবার আগেই তাই নমস্কার জানিয়ে তোমার ক্ষমা-ভিক্ষে করতে এলুম। গোসাই বলিলেন, আমরা বৈরাগী মানুষ, ভিক্ষে নিতেই পারি, দিতে পারব না ভাই ! কিন্তু আবার কবে উপন্দ্রব করতে আসবে বল ত দিদি ? অাশ্রমটি যে আজ অন্ধকার হয়ে যাবে । কমললত বলিল, সত্য কথা গোসাই-সত্যিই মনে হবে বুঝি কোথাও আলো জলেনি, সব অন্ধকার হয়ে আছে। বড়গোসাই বলিলেন, গানে, আনন্দে, হাসিতে, কৌতুকে এ কয়দিন মনে হচ্ছিল যেন চারিদিকে আমাদের বিদ্যুতের আলো জলচে– এমন আর কখনো দেখিনি । আমাকে বলিলেন, কমললত নাম দিয়েচে নতুনগোসাই, আর আমি নাম দিলাম আজ আনন্দময়ী – এইবার তাহার উচ্ছ্বাসে আমাকে বাধা দিতে হইল, বলিলাম, বড়গোঁসাই, বিদ্যুতের আলোটাই আমাদের চোখে লাগল, কিন্তু তার কড়কড় ধ্বনি যাদের দিবারাত্র কর্ণরন্ধে পশে তাদের একটু জিজ্ঞাসা করে। আনন্দময়ীর সম্বন্ধে, অন্তত: রতনের মতামতটা— রতন পিছনে দাড়াইয়াছিল, পলায়ন করিল। রাজলক্ষ্মী বলিল, ওদের কথা তুমি শুনো না গোসাই, ওরা দিনরাত আমায় হিংসে করে। আমার পানে চাহিয়া কহিল, এবার যখন আসর এই রোগ-পটক অরসিক লোকটিকে ঘরে তালাবদ্ধ করে আসব—ওর জালায় কোথাও গিয়ে যদি আমার স্বস্তি আছে ! ጏ ❖ክr