পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ লোকটা যা হোক একটু প্র্যাকটিস ত করচে—দু-একটা ওষুধ ও যে না জানে তা নয় —কিন্তু তা হবে না । মুখুয্যেমশাইকে নইলে চলবে না। আর তাদের বা কি বলি । একটা ওষুধের সিম্টম যদি মুখস্ত করবে ! আরে, এত সহজ বিদ্যে নয়—এত সহজ নয়! তা হলে সবাই ডাক্তার হ’ত । সবাই প্রিয় মুখুয্যে হ’ত । বাবা, জামাটা ছেড়ে ফেলো ন!— ছাড়চি মা। এই আজই—ধণ করে যে পলসেটিলা দিয়ে ফেললি, প্র্যাক্টস ত কচ্চিস্, কিন্তু বল দেখি তার অ্যাকশন ? দেখি আমার মত কেমন তুই কণ্ঠস্থ বলে যেতে পারিস। সন্ধ্যে, ধর দিকি মা বইখানা, একবার পলসোটলাট— তোমার আবার বই কি হবে বাবা! আজ খাওয়া-দাওয়ার পরে ওই ওষুধটাই তোমার কাছে পড়ে নেব । দেবে পড়িয়ে বাবা ? দেব বইকি মা- দেব বইকি। নক্সের সঙ্গে তফাতটা হচ্চে আসলে—ওই বইখানা একবার -- তোমার পায়ে ততক্ষণ তেলটুকু মাখিয়ে দিই না, বাবা । বড় বেলা হয়ে গেছে — মা আবার বাগ করবেন । বলিয়া সে একবার উদ্বিগ্ননেত্ৰে দেখিয়া লইল তাহার জননী ঘাট হইতে ফিরিতেছেন কিনা এবং আপত্তি করিবার পূৰ্ব্বেই তেলের বাটি হইতে খানিকটা তেল লইয়া বাবার পায়ে মাথাইয়। দিল । ই:–একটু সবুর করলিনে ম । একবার দেখে নিয়ে— আজ কাকে কাকে দেখলে বব ? আচ্ছা, পঞ্চ জেলের ঠাকুৰ্দ্দদা— সে বুড়ো ? ব্যাট মরবে, মরবে, মরবে, তুই দেখে নিস সন্ধ্যে। আর ঐ পরাণ চাটুযো-ও হারামজাদার নামে আমি কেস করে তবে ছাড়ব । যে রুগীটি পাবো, অমনি তাকে গিয়ে ভাঙচি দিয়ে আসবে ! একদিনের বেশী যে কেউ আমার ওষুধ খেতে চায় না সে কেন ? সে কেবল ওই নচ্ছার বোম্বেটে পাজী উল্লুকের জন্তে । কি করেচে জানিস্ ? পঞ্চার ঠাকুর্দাকে যাই একটি রেমিডি সিলেক্ট করে দিয়ে এসেচি, অমনি ব্যাটা পিছনে গিয়ে বলেচে, কই দেখি কি দিলে ? সন্ধ্যা ক্রুদ্ধস্বরে কহিল, তার পরে ? তাহার পিতা ততোধিক ক্রুদ্ধস্বরে বললেন, ব্যাট বজাত, ঢকৃঢক্‌ ক’রে সমস্ত শিশিটা খেয়ে ফেলে বলেছে, ছাই ওষুধ ! এই ত সমস্ত খেয়ে ফেললুম। কই আমার ওষুধ সে থাক্ ত দেখি ! এই না বলে এক শিশি ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে এসেচে! তারা বলে, ঠাকুর, তোমার ওষুধ সে এক চুমুকে খেয়ে ফেললে, তার ওষুধ তুমি খেতে পার ত তোমার ওষুধ আমরা খাব, নইলে না । সন্ধ্য ভয়ে ব্যাকুল হইয়া বলিল, সে ত তুমি খাওমি বাবা ? 3**