পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ এ কি রে, তুই যে ? হ্যা, আমিই। কাল থেকে বসে আছি –একখানা চিঠি আছে। বুঝিলাম সেই প্রার্থনার উত্তর । কহিলাম, চিঠি ডাকে দিলেও ত আসত ? রতন বলিল, সে ব্যবস্থা চাষাভুষো মূটেমজুর গেরস্ত লোকদের জন্য । মার চিঠি একটা লোক না-খেয়ে না-ঘুমিয়ে পাঁচশো মাইল ছুটে হাতে করে না জানলে ক্ষোয় বায় । জানেন ত সব, কেন মিছে জিজ্ঞাসা করেছেন । পরে শুনিয়াছিলাম রতনের এ অভিযোগ মিথ্যা। কারণ সে নিজেই উদ্যোগী হইয়া এ চিঠি হাতে করিয়৷ আনিয়াছে। এখন মনে হইল গাড়ির ভিড়ে ও আহারাদির অব্যবস্থায় তাহার মেজাজ বিগড়াইয়াছে । হাসিয়া কহিলাম, উপরে আয় । চিঠি পরে হবে, চল তোর থাবার ধোগাড়টা আগে করে দিই গে । রতন পায়ের ধূলা লইয়া প্রণাম করিয়া বলিল, চলুন। Nලා সশব্দ উদগারে চমকিত করিয়া রতন দেখা দিল । কি রতন, পেট ভরলে ? আঞ্জে ই । কিন্তু আপনি যাই বলুন বাবু, আমাদের কলকাতায় বাঙালী বামুনঠাকুর ছাড়া রান্নার কেউ কিছু জানে না। ওদের ঐসব মেডুছা মহারাজগুলোকে ত জানোয়ার বললেই হয় । উভয় প্রদেশের রান্নার ভালোমন, অথবা পাচকের শিল্প-নৈপুণ্য লইয়া রতনের সঙ্গে কখনো তর্ক করিয়াছি বলিয়। মনে পড়িল না। কিন্তু রতনকে যতদূর জানি তাহাতে বুঝিলাম সুপ্রচুর ভোজনে সে পরিতুষ্ট হইয়াছে। না হইলে পশ্চিম পাচকদের সম্বন্ধে এমন নিরপেক্ষ সুবিচার করিতে পারিত না । কহিল, গাড়ির ধকলটা ত সামান্ত নয়, একটু আড়মোড়া ভেঙে গড়িয়ে না নিলে – বেশ ত রতন, ঘরে হোক, বারাণায় হোক, একটা বিছানা পেতে গুয়ে পড়ে গে। কাল সব কথা হবে । কি জানি কেন, চিঠির জন্ত উৎকণ্ঠ ছিল না । মনে হুইতেছিল, সে যাহা লিথিয়াছে তাহা ত জানিই । রতন ফতুয়ার পকেট হইতে একখানা খাম বাহির করিয়া হাতে দিল। আগাগোড়া গাল দিয়া শিলমোহর করা । বলিল, বারানার ঐ দক্ষিণের জানালার ধারে বিছানাট পেতে ফেলি, মশারি খাটাবার হাঙ্গামা নেই -কলকাতা ছাড়া এমন মুখ কি আর কোৰাও আছে! বাই— 卷朝