পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$. হরিশের স্ত্রী নয়নতারা বিদেশে থাকিয়া বেশ একটু সাহেবিয়ানা শিখিয়াছিল । ছেলেদের সে বিলাতী পোষাক ছাড়া বাহির হইতে দিত না । আজ সকালে সিদ্ধেশ্বরী আহিকে বসিয়াছিলেন, কন্যা নীলাম্বরী ঔষধের তোড়জোড় স্বমুখে লইয়া বসিয়াছিল, এমন সময় নয়নতার ঘরে ঢুকিয়া বলিল, দিদি, দরজি অতুলের কোট তৈরি করে এনেচে, কুড়িটা টাকা দিতে হবে যে । সিদ্ধেশ্বরী আহ্নিক ভুলিয়া বলিয়া উঠিলেন, জামার দাম কুড়ি টাকা ! নয়নতারা একটু হাসিয়া বলিল, এ আর বেশী কি দিদি। আমার অতুলের এক একটি স্বট তৈরী করতে ফাট-সত্তোর টাকা লেগে গেছে। ‘স্কুট কথাটা সিদ্ধেশ্বরী বুঝিলেন না, চাহিয়া রহিলেন। নয়নতারা বুঝাইয়া বলিল, কোট, প্যান্ট, নেকটাই—এইসব আমরা স্কট বলি। সিদ্ধেশ্বরী ক্ষুব্ধভাবে মেয়েকে বলিলেন, নীলা, তোর খুড়ীমাকে ডেকে দে, ঢাকা বা’র করে দিয়ে যাক । নয়নতারা বলিল, চাবিটা দাও—আমি বা’র করে নিচ্চি । নীল উঠিয় দাড়াইয়াছিল—সেই বলিল, মা কোথা পাবেন, লোহার সিন্দুকের চাবি বরাবর খুড়ীমার কাছে থাকে, বলিয়া চলিয়া গেল । কথা শুনিয়া নয়নতারার মুখ রাঙা হইয়া উঠিল! কহিল, ছোটবোঁ এতদিন ছিল না, তাই বুঝি দিনকতক সিন্দুকের চাবি তোমার কাছে ছিল দিদি। সিদ্ধেশ্বরী অাহিক করিতে শুরু করিয়াছিলেন, জবাব দিলেন না । মিনিট-দশেক পরে টাকা বাহির করিয়া দিতে শৈলজা যখন ঘরে আসিয়া চুকিল তখন অতুলের নূতন কোট লইয়া রীতিমত আলোচনা শুরু হইয়া গিয়াছে। অতুল কোটটা গায়ে দিয়া ইহার কাট-ছাট প্রভৃতি বুঝাইয়া দিতেছে এবং তাহার মা ও হরিচরণ মুন্ধচক্ষে চাহিয়া ফ্যাসান সম্বন্ধে জ্ঞানার্জন করিতেছে। অতুল বলিল, ছোটখুড়ীম, তুমি দেখ ত কেমন তৈরী করেচে । শৈল সংক্ষেপে ‘বেশ বলিয়া সিন্দুক খুলিয়া কুড়িট টাকা গনিয়া তাহার হাতে দিল । নয়নতারা উপস্থিত সকলকে শুনাইয়া নিজের ছেলেকে উদ্দেশ করিয়া বলিল, eোর তোরঙ্গভরা পোষাক, তবু তোর আর কিছুতেই হয় না। ছেলে অধীরভাবে জবাব দিল, কতবার বলব মা তোমাকে ? আজকালকায় ফ্যাগান এইরকম। কাট-ছাট অস্ততঃ একটাও এরকমের না থাকলে লোকে হাসবে ఫినీళీe