পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

मिशूडि টালালি বুঝিনে, তোমাকে খড়ের দালালি কাল থেকে শুরু করতে হবে। সকালে আমি ব্যাঙ্কের ওপর আট হাজার টাকার চেক দেব। চার হাজার টাকার খড় কিনবে, চার হাজার টাকা জমা থাকবে । এটা নষ্ট হলে তবে ও-টাকায় হাত দেবে—তার আগে নয় । বুঝলে ? অামি তোমাদের বসে বসে খাওয়াতে পারব না—যাও । রমেশ নীরবে চলিয়া গেলে হরিশ মাথা নাড়িতে নাড়িতে বলিলেন, এই আট হাজার টাকাই জলে গেল ধরে রাখুন। কি বল বৌঠান ? সিদ্ধেশ্বরী চুপ করিয়া রহিলেন । জবাব না পাইয়া হরিশ দাদার দিকে চাহিয়া কহিলেন, টাকাটা কি সত্যিই ওকে দেবেন নাকি ? গিরীশ বিম্মিত হইয়া বলিলেন, সত্যি কি রকম ? হরিশ বলিলেন, এই সেদিন চার হাজার টাকা জলে দিলে, আবার আট হাজার সেই জলেই ফেলতে দেবেন, এ যেন আমি ভাবতেই পারিনে । গিরীশ কহিলেন, তা হলে তুমি কি রকম করতে বল ? হরিশ বসিলেন, রমেশ ব্যবসা-বাণিজ্যের জানে কি দাদা ? আট হাজারই দিন, আর আট লাখই দিন, আটটা পয়সাও ফিরিয়ে আনতে পারবে না— আমি বাজি রেখে বলতে পারি। এই টাকাটা উপার্জন করে জমাতে কত সময় লাগে একবার ভেবে দেখুন দেখি ! গিরীশ তৎক্ষণাৎ সায় দিয়া বলিলেন, ঠিক ঠিক, ঠিক বলেচ। ওকে টাকা দেওয়া মানেই জলে ফেলা, ঠিক ত । ও কি আবার একটা মানুষ । হরিশ উৎসাহ পাইয়া কহিতে লাগিলেন, তার চেয়ে বরং একটা চাকরি-বাকরি জুটিয়ে নিয়ে করুক। যার যেমন ক্ষমতা তার তেমনি করা উচিত। এই যে ছেলেদের পড়ার জন্যে আমাকে মাসে ২৫ টাকা মাস্টারকে দিতে হচ্চে, এ কাজটাও ত ওর দ্বারা হতে পারে । সেই টাকাটা সংসারে দিয়েও আমাদের কতক সাহায্য করতে পারে। কি বল বৌঠান ? কিন্তু বৌঠান জবাব দিবার পূৰ্ব্বেই গিরীশ খুশী হইয়া বলিলেন, ঠিক কথা বলেচ হরিশ। কাঠবিড়াল নিয়ে রামচন্দ্র সাগর বেঁধেছিলেন যে। স্ত্রীর দিকে চাহিয়া কহিলেন, দেখেচ বড়বে, হরিশ ঠিক ধরেচে। আমি বরাবর দেখেচি কিনা ছেলেবেলা থেকেই ওর বিষয়-বুদ্ধিটা ভারী প্রখর । ভবিষ্যৎ ও যত ভেবে দেখতে পারে এমন কেউ নয়। আমি ত আর একটু হলেই এতগুলো টাকা নষ্ট করে ফেলেছিলাম। কাল থেকেই রমেশ ছেলেদের পড়াতে আরম্ভ করে দিক। খবরের কাগজ নিয়ে সময় নষ্ট করবার দরকার নেই। সিদ্ধেশ্বরী বলিলেন, টাকাটা কি তবে দেবে না নাকি ? 苓●●