পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিস্কৃতি না পারি গতর দিয়ে সাহায্য করতে। কিন্তু তাই বলে কি চিরকাল করা ভালো ? সিদ্ধেশ্বরী রুদ্ধ রোধে মুখ রাঙা করিয়া কহিলেন, এত ভাল কবে থেকে হলি ল' ? এত ভাল-মন্দর বিচার এতদিন তোদের ছিল কোথায় ? শৈল অবিচলিত স্বরে বলিল, কেন রাগ করে শরীর খারাপ করচ দিদি ? তোমারও আর আমাদের নিয়ে ভাল লাগচে না, আমার নিজেরও ভাল লাগচে না । ক্রোধে সিদ্ধেশ্বরীর মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। নয়নতারা তাহার হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, দিদির না হয় ভাল না লাগতে পারে, সে কথা মানি, কিন্তু তোমার ভাল লাগচে না কেন ছোটবোঁ ? শৈল ইহার জবাব না দিয়াই বাহির হইয়া যাইতেছিল, সিদ্ধেশ্বরী চেচাইয়া ডাকিয়া বলিলেন, বলে যা পোড়ারমুখী, কবে তুই বিদেয় হবি—আমি হরিরনোট দেব ! আমার সোনার সংসার ঝগড়া বিবাদে একেবারে পুড়িয়ে ঝুড়িয়ে দিলি ! মেজবোঁ কি মিছে বলে যে, কোমরের জোর না থাকলে মানুষের এত তেজ হয় না ? কত টাকা আমার তুই চুরি করেচিস, তার হিসেব দিয়ে যা । - শৈল ফিরিয়া দাড়াইল । তাহার মূখ-চোখ অগ্নিকাণ্ডের মত মুহূৰ্ত্তকালের জন্য প্রদীপ্ত হইয়। উঠিল, কিন্তু পরক্ষণেই সে মুখ ফিরাইয়া নিঃশবে বাহির হইয়া গেল । সিদ্ধেশ্বরী ছিন্ন-শাখার ন্যায় শয্যাতলে লুটাইয়া পড়িয়া কাদিয়া উঠিলেন, হতভাগীকে আমি এতটুকু এনে মানুষ করেছিলুম মেজবোঁ ; সে আমাকে এমনি করে অপমান করে গেল। কৰ্ত্তারা বাড়ি আস্থন, ওকে আমি উঠোনের মাঝখানে যদি না আজ জ্যান্ত পুতি ত আমার নাম সিদ্ধেশ্বরী নয়। 수 সিদ্ধেশ্বরীর স্বভাবে একটা মারাত্মক দোষ ছিল—র্তাহার বিশ্বাসের মেরুদণ্ড ছিল না। আজিকার দৃঢ়নির্ভরতা কাল সামান্ত কারণেই হয়ত শিথিল হইতে পারিত। শৈলকে তিনি চিরদিন একান্ত বিশ্বাস করিয়া আসিয়াছেন, কিন্তু দিন-কয়েকের মধ্যেই নয়নতারা যখন অন্যরূপ বুঝাইয়া দিল, তখন তার সন্দেহ হইতে লাগিল, মূল যে কোথায় তাহাও অনুমান করা তাহার কঠিন হইল না। তথাপি সে স্বামী-পুত্র লইয়া এই শহর অঞ্চলে স্বতন্ত্র বাসা করিয়া কোনমতেই থাকিতে সাহস করিবে না ইহাও তিনি জানিতেন । রাত্রে বড়কর্তা তাহার বাহিরের ঘরে বলিয়া, চোখে চশমা অঁাটিয়া গ্যাসের জালোকে নিবিষ্টচিত্তে জরুরী মোকদ্দমার দলিলপত্র দেখিতেছিলেন, সিদ্ধেশ্বরী ঘরে 象够》